কর্ণাটকে সরকার গড়ার দাবি বিজেপির, জট কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফের ইয়েদুরাপ্পা?
বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হলে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বকে বেশ কিছু সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে, যেগুলির মধ্যে রয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যাও।
বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হলে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বকে বেশ কিছু সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে, যেগুলির মধ্যে রয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যাও।
মঙ্গলবার ছয় ভোটের ব্যবধানে কর্ণাটক বিধানসভায় কংগ্রেস-জেডি (ইউ) জোট সরকারের বিরুদ্ধে আস্থাভোট জেতার পর আজ দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলচনার পর রাজ্যপাল বাজুভাই বালার সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্যের বিজেপি প্রধান এবং সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। জোট সরকারের পতনের নেপথ্যে মূল কাণ্ডারি ৭৬ বছর বয়সী ইয়েদুরাপ্পা মঙ্গলবার বলেন, "এ জয় গণতন্ত্রের জয়। কুমারস্বামীর ১৪ মাসের সরকার মানুষের হতাশার কারণ হয়ে উঠেছিল। আগামী দিনে রাজ্যে নব উন্নয়নের জোয়ার আসবে।"
Advertisment
কর্ণাটকের ভারপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক পি মুরলীধর রাও বলেছেন, "বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই সরকার গঠনের দাবিদার বিজেপি। আমরা এই দায়িত্বভার গ্রহণ করতে আগ্রহী, এবং এ বিষয়ে আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি এবং সংসদীয় বোর্ডের নির্দেশ মেনে চলব।"
উল্লেখ্য, আজ থেকে ১৪ মাস আগে তিনদিনের দড়ি টানাটানির পর কর্ণাটকে পতন ঘটে বিজেপি সরকারের, এবং আস্থাভোটের মুখোমুখি না হয়েই গদি ছাড়েন তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিন সপ্তাহ ব্যাপী নাটকের পর পাল্টে যায় পাশা, ১০৫-৯৯ এর ব্যবধানে আস্থাভোট হেরে যায় এইচ ডি কুমারস্বামীর সরকার। কাজেই মঞ্চের আলো ফের একবার বিজেপির ওপর।
Advertisment
রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে দলের জাতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি যাবেন ইয়েদুরাপ্পা, এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হলে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বকে বেশ কিছু সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে, যেগুলির মধ্যে রয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যাও। এই মুহূর্তে বিরোধীপক্ষের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সাহায্যে যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে বিজেপি, তার বহর নিতান্তই ক্ষীণ। এবং জাতীয় নেতাদের মনে রাখতে হবে রাজ্যে দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণের কথা, যার অংশ হিসেবে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার, এবং দুই প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী কে এস ঈশ্বরাপ্পা এবং আর অশোক।
এছাড়াও প্রশ্ন রয়েছে বিধানসভার অধ্যক্ষকে নিয়ে, বর্তমানে যিনি কংগ্রেসের সদস্য। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা এবং বিজেপির নড়বড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষের পদটি আগামীদিনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ইয়েদুরাপ্পার উত্তরসূরী তৈরি করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার রূপায়ণ করতে সরকার গঠনকে অজুহাত হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন দলীয় নেতৃত্ব।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ক্ষমতায় ফেরার একাধিক এবং আপ্রাণ চেষ্টা সফল হওয়ায় রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের দাবি নিয়ে যাওয়া যেমন ইয়েদুরাপ্পার পক্ষে সঙ্গত, তেমনই একথাও মনে রাখতে হবে, বিজেপিতে অলিখিত অবসরের বয়সসীমা ৭৫। সেই সীমা লঙ্ঘন করেছেন ৭৬ বছরের ইয়েদুরাপ্পা। তা সত্ত্বেও, এবং দলের কিছু শীর্ষ নেতার সঙ্গে তাঁর তিক্ত সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেও, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে সম্ভবত বাধ্য হবে বিজেপি। মুরলীধর রাও যেমন বললেন, "আমাদের দলের নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা, এবং আমরা তাঁর নেতৃত্বেই আস্থাভোট করেছি। সবকিছু বিচার করেই নিশ্চয় সিদ্ধান্ত নেবেন দলীয় নেতৃত্ব।"
আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা!
একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন