রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আমফান ও করোনা দুর্নীতি, বেকারত্বের হার, চা শ্রমিকদের দুরবস্থা-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দেয় বিজেপির যুব মোর্চা। সেই অভিযান ঘিরেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গে।উত্তরকন্যা অভিযানে গিয়ে মৃত্যু হল এক বিজেপির কর্মীর। বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তির নাম উলেন রায়। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের সেলের আঘাতে মৃত্যু বলে দাবি বিজেপির। প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দিয়েছে পদ্ম বাহিনী।
যদিও বিজেপির কর্মসূচি 'হিংসাত্ম' বলে দাবি করে তাদের দিকে ওঠা অভিযোগ নস্যাত করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। সোশাল মিডিয়ায় পুলিশ জানিয়েছে, 'আজ শিলিগুড়িতে, একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচির সময় মারাত্মক হিংসাত্মক কার্যকলাপ করেছেন। তারা অগ্নিসংযোগ, ইট-বৃষ্টি, গুলি চালানো এবং সরকারী সম্পত্তি ভাঙচুর করছেন। পুলিশ সংযম দেখিয়েছে এবং লাঠিচার্জ বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনি। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কেবল জল কামান এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহৃত করা হয়েছে। একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে।'
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/12/aa.jpg)
এদিন, পুলিশ এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ। মিছিলে বাধা দিতেই বিজেপির কর্মীদের তরফে পাথর বৃষ্টি করা হয় পুলিশের দিকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জল কামান ব্যবহার করছে পুলিশ। ১৪৪ ধারা জারি করে বিজেপির এই জমায়েতকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/12/b1.jpg)
পদ্ম শিবিরের যুব মোর্চা এই কর্মসূচীর ডাক দিলেও বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের প্রথম সারির নেতারা এই অভিযানে শামিল হয়েছেন। কিন্তু অভিযানের শুরুতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়েছেন বিজেপির নেতারা। বিজেপির এই অভিযানকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়েছে শিলিগুড়ি। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হলেই জলকামান ও টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটান হয়। যদিও পুলিশের এই আক্রমণ অতিক্রম করেই জয় শ্রী রাম ধ্বনি তুলেই ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায় পদ্ম ব্রিগেড। নিশীথ প্রামাণিক ঘটনাস্থলে এলেও পিছু হঠতে বাধ্য হন।
মিছিলে ব্যস্ত কর্মী সমর্থকেরা
এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "আমাদের উপর কাঁদানে গ্যাসের শেল, জল কামান নিক্ষেপ করা হয়। আমাদের কর্মীরা আহত হয়েছে, মাথা ফেটেছে। একজন এইমাত্র হাসপাতালে একজন মারাও গেলেন। শান্তিপূর্ণ মিছিলে অশান্তি তৈরি করা হল।" বিজেপির এই অভিযান ব্যর্থ এমনটাই দাবি তৃণমূল সাংসদের। তিনি বলেন, "এর আগেও নবান্ন অভিযানের সময় এমনটা করেছে বিজেপি। পুলিশকে পাথর ছুঁড়েছে, ব্যারিকেড ভেঙেছে, এসব বিজেপির হিংসাত্মক রাজনীতির প্রকাশ। বিজেপি চাইছিল যেন পুলিশ গুলি ছোড়ে। তবে পুলিশ বাহিনী সংযম দেখিয়েছে।"
কৈলাস বিজয়বর্গীয় নেতৃত্বে একটি মিছিল আসে জলপাই মোড় থেকে। দিলীপ ঘোষের মিছিল আসে ফুলবাড়ি থেকে। সেই মিছিলটিও ফ্লাইওভার পেরতেই বাধাপ্রাপ্ত হয়। উত্তপ্ত কর্মী সমর্থেকরা ব্যারিকেডের আগুনও লাগিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন, 'আইন প্রত্যাহার কর, নয়তো বিজেপি ভারত ছাড়', কৃষকদের সমর্থনে হুঙ্কার মমতার
এদিকে, সোমবার সকালে এনএইচপিসি-র বাংলো থেকে বেরোতেই দিলীপ-সায়ন্তনকে আটকানো হয় বলে অভিযোগ করে বিজেপি। সে সময় বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে পুলিশের একচোট বচসাও হয় বলে দাবি করে বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়ে দেন পুলিশের চেষ্টাতে দলের কর্মীদের এই অভিযান আটকাতে পারবে না কেউ। বিজেপির এই অভিযানকে কেন্দ্র করে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন