শুধু শাসক দল তৃণমূল নয়, এবার ২১ জুলাই 'শহিদ দিবস' পালন করবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি-ও। ২রা মে ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ভোটের পর থেকে বহু বিজেপি কর্মী হিংসার বলি হয়েছেন বলেও অভিযোগ পদ্ম শিবিরের। বিজেপির দাবি, মমতা সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় এই হিংসা। তাই মৃত কর্মীদের শহিদের মর্যাদা দিয়ে ২১ জুলাই এবার পাল্টা 'শহিদ দিবস' পালনের ঘোষণা করল বঙ্গ বিজেপি।
শুধু রাজ্যের সীমানায় নয়, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের কর্মসূচি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে মরিয়া গেরুয়া নেতৃত্ব। ২১ জুলাই রাজ্যের পাশাপাশি রাজধানীতেও 'শহিদ তর্পণ' পালন করবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। বুধবার দিল্লির রাজঘাটে বাংলায় তৃণমূল সরকারের অত্যাচারের প্রতিবাদে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে ধর্নায় বসবেন বাংলা থেকে নির্বাচিত দলীয় সাংসদরা। এছাড়া, হেস্টিংস কার্যালয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে হবে ধর্না। দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। ভার্চুয়ালি এতে যোগ দেবেন রাজ্যের সব জেলার মণ্ডল ও বুথস্তরের নেতা, কর্মীরা।
আরও পড়ুন- “আপ ক্রোনোলজি সমঝিয়ে!”, পেগাসাস বিতর্কে বিরোধীদের কড়া আক্রমণ অমিত শাহের
মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'ভোটের ফল প্রকাশের পর ৫ মে থেকে এপর্যন্ত রাজনৈতিক হিংসায় বিজেপির ৩০ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। পুলিশ শাসক দলের নির্দেশে নিষ্ক্রিয়। বাংলার পরিস্থিতি দেখতে এসে প্রহৃত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য। ফলে এরাজ্যে গণতন্ত্র নেই। বাম সরকারের পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে যুব কংগ্রেসের শহিদ দিবস কর্মসূচি তৃণমূল হাইজ্যাক করে প্রতি বছর শহিদ দিবস পালন করে। কিন্তু গোটা দেশ সহ বিশ্বের বাঙালি এবার তৃণমূল সরকারের আসল চেহারাটা জানবে। তাই নিহত বিজেপি কর্মীদের স্মৃতি তর্পণে ২১ জুলাই এবার আমরাও শহিদ দিবস পালন করব।' একই সঙ্গে শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, 'বাংলায় আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে বিরোধী দল করলেই নানাভাবে অত্যাচারের শিকার হতে হয়। রাজ্যজুড়ে ভয়, সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।'
আরও পড়ুন- ‘হেরো বিজেপি ২০২৪-এ আরও প্রস্তুত হয়ে আসুক’, আঁড়ি পাতা-কাণ্ডে শাহকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
বাম সরকারের আমলে ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের কর্মসূচিতে গুলি চালায় পুলিশ। সেদিন মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। সেই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই ওই দিন প্রতিবাদ দিবস পালন করা হয়। তবে, যুব কংগ্রেসের কর্মসূচি হলেও তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই ওই দিনটি ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে পালন করছে জোড়া-ফুল শিবির।
২০১১ সালে প্রথমবার রাজ্যপাটের ক্ষমতায় এসে ব্রিগেড ময়দানে বড় করে শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল। তারপর অবশ্য ধর্মতলায়তেই এই কর্মসূচি হয়ে আসছে। কিন্তু করোনার কারণে গতবার তৃণমূলের শহিদ দিবস হয় ভার্চুয়ালভাবে। সংক্রমণ কমলেও অবশ্য ঝুঁকি নিতে নারাজ শাসক দল। তাই এবারও তৃণমূল শহিদ দিবস পালন করবে ভার্চুয়ালি। ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখবেন মমতাও। অবশ্য বাংলায় বিজয়ে হ্যাটট্রিকের পর এবার ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচিকে সর্বভারতীয় রূপ দিতে তৎপর ঘাস-ফুল নেতৃত্ব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন