"তৃণমূল কংগ্রেস ও বালি মাফিয়া মিলেই খুন করেছে আমাদের বুথ কমিটির সভাপতি সন্দীপ ঘোষকে।" সোমবার দুর্গাপুরে এই অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য় সাধারন সম্পাদক সায়ন্তন বসু। এদিন সকাল থেকেই এক বিজেপি যুবনেতার খুনের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় কাঁকসা থানার অন্তর্গত মলানদিঘীর সরস্বতীগঞ্জে। মৃতের নাম সন্দীপ ঘোষ (২৩), মাইকেল মধূসূদন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও এক বিজেপি কর্মী, জয়দীপ ব্যানার্জী। এরপরই বিজেপির পক্ষ থেকে এই ঘটনায় তৃণমূলের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়, যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই হামলার জেরে আগামীকাল দুর্গাপুর বন্ধ ডেকেছে বিজেপি।
জানা গেছে, বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত সরস্বতীগঞ্জে বুথ স্তরে বৈঠক ছিল। সেই বৈঠক সেরে বাইকে করে ফিরছিলেন সন্দীপ ও জয়দীপ। সেই সময় তাঁদের ওপর রড-লাঠি নিয়ে হামলা চালায় প্রায় ১৫-২০ জনের একটি দল। প্রথমে এলোপাথাড়ি মারধর, তারপর গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপির তরফে। দুষ্কৃতিদের ছোড়া সেই গুলি লাগে সন্দীপের মাথায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। গুরুতর জখম অবস্থায় জয়দীপকে কলকাতার বিধাননগরে একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার খবর যায় থানায়। কাঁকসা থানার পুলিশ আসে।
আরও পড়ুন: বীরভূম বিজেপির ঘরে কাজিয়া, পদ ছাড়লেন ৫৭ জন কর্মী
এদিকে এই ঘটনায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখার্জীর বক্তব্য, "দিল্লি থেকে দলের জন্য যে টাকা আসে, সেই টাকার বখরা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই ঝামেলা চলছিল। তার জেরে নিজের দলের কর্মীদের হাতেই খুন হয়েছে সন্দীপ। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।"
অন্যদিকে বিজেপি নেতা রমন শর্মার দাবি, "আমাদের মনোবল ভাঙ্গার জন্য তৃণমূল এসব কাজ করছে। তৃণমূল এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে বলেই তারা আমাদের কর্মীদের প্রাণ নিতেও ছাড়ছে না। ওই এলাকাটি তৃণমূল দুষ্কৃতিদের দখলে রয়েছে, যেখানে পুলিশ প্রশাসন ঢুকতেও ভয় পায়।"
মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজে বিএর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, হওয়ার পাশপাশি মলানদিঘীতে একটি বেসরকারী কলেজে আইটিআই শিক্ষারত ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র সন্দীপ। বাবা বিজয় ঘোষের অভিযোগ, "সন্দীপের মৃত্যুর পেছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে। আমি জেলা সভাপতিকে অভিযোগ জানিয়েছি। ওই রাতে জঙ্গলের ভেতরে কেন মিটিং করতে নিয়ে গেল? আমি জানতাম না যে ও মিটিং করতে গিয়েছিল। বলে গিয়েছিল পিকনিকে যাচ্ছে। আমার ছেলে রাজনীতির শিকার হয়ে গেল।"