গত ৪ মাসে তিনটি এবং সাড়ে চার বছরেও তিনটি মুখ্যমন্ত্রী পেল উত্তরাখণ্ড। শুক্রবারই রাজ্যপাল বেবি রানী মৌর্যর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিরথ সিং রাওয়াত। গত মার্চেই তিনি দেবভুমির মুখ্যমন্ত্রীর হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। দেবেন্দ্র সিং রাওয়াতের জায়াগায় তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন শাহ-নাড্ডারা. সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির কলহের জেরে এবার গদি ছাড়তে হয়েছে তাঁকেও। সেই ফাঁকা জায়গায় এবার উত্তরাখণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন খাতিমার বিজেপি বিধায়ক পুষ্কর সিং ধানি।
যদিও এই পদের জন্য প্রায় হাফ ডজন বিজেপি নেতা দৌড়ে ছিলেন। শুক্রবারই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ডাকে দিল্লি গিয়েছিলেন তিরথ সিং। তারপর সন্ধ্যায় দেহরাদুন ফিরেই রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দেন তিনি। আর উত্তরাখণ্ডের এই রাজনৈতিক অস্থিরতাকে হাতিয়ার করেছে কংগ্রেস। মানুষের রায়ের সঙ্গে প্রতারণা করে দেবভূমিতে অস্থিরতা তৈরি করছে মোদী-শাহ। এভাবেই সরব হয়েছে কংগ্রেস।
নিত্যানন্দ স্বামী থেকে শুরু করে বিজেপি গত ১০ বছরে ৮ জন নেতাকে গদিতে বসিয়েছেন। এদিন সরব হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত। রাজ্যে উন্নয়নের কোনও কাজ না করে ক্রমাগত মুখ্যমন্ত্রী বদলে চলেছে বিজেপি।এমন কটাক্ষও বিরোধীদের তরফে করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য বছর ঘুরলেই সেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকেই ঝুঁকি না নিয়ে ঘর সামলাতে আসরে নাড্ডা-শাহ। তবে, বিজেপির এই কোন্দলের সুযোগ কতটা নিতে পারবে কংগ্রেস? সেটা ২০২২-এ স্পষ্ট হবে। এমনটাই জানান বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, ১০ মার্চ ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের পরিবর্তে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছিলেন তিরথ সিং রাওয়াত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ চার মাসও পূর্ণ হল না। মুখ্যমন্ত্রীত্ব পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিরথ। শুক্রবার রাতেই রাজভবনে গিয়ে বেবি রানি মৌর্যের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিয়েছেন তিনি। তার আগে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতচি জেপি নাড্ডার সঙ্গেও আলোচনা সারেন তিরথ সিং রাওয়াত। বিজেপি সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরে বিজেপির সদর দফতরে পরিষদীয় দলের বৈঠক হবে, সেখানেই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত হতে পারে।
অপরদিকে, কেন এই ইস্তফা? তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই জোর জল্পনা চলছিল। নেপথ্যে বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিবাদ, তিরথের একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যের জেরই প্রকট হয়ে উঠছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে সংবিধানের নিয়মাবলীকেই দায়ী করেছে গেরুয়া শিবির। শর্ত অনুয়ায়ী, যদি কেউ বিধায়ক না হন, তাহলে তাঁকে মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে উপ নির্বাচনে জয়ী হতে হবে। সেই অনুযায়ী ১০ সেপ্টেম্বর তিরথ সিং রাওয়াতের মুখ্যমন্ত্রীত্বের ছয় মাসের মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু তিরথ বিধায়ক নন। তাই তাঁকে উপনির্বাচনে লড়াই করে জয় পেতে হবে। এদিকে করোনা পরিস্থিতির জন্য উপ-নির্বাচনও অনিশ্চিত। তাই মেয়াদ শেষের আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে হল তিরথ সিং রাওয়াতকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন