লোকসভা নির্বাচনের আগে আবারও ধাক্কা খেল কংগ্রেস। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেশ পাচৌরি এবং প্রাক্তন সাংসদ গজেন্দ্র সিং কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ড. মোহন যাদব এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি ভিডি শর্মা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের উপস্থিতিতেই কংগ্রেস ছেড়ে পদ্মপতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা।
তিনবার রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে কংগ্রেস
সুরেশ পাচৌরিকে কংগ্রেস তিনবার রাজ্যসভায় মনোনীত করে। প্রথমবার তিনি ১৯৯০-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ১৯৯৬-২০০২ এবং তৃতীয়বারের জন্য ২০০২ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার সদস্য পদে বহাল ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি ২ বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন। যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি তিনি কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন।
সুরেশ পাচৌরিকে কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা। তাঁকে গান্ধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। পাচৌরি ১৯৮১-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশ যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন। ১৯৮৪-১৯৮৫ সালে মধ্যপ্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি। ১৯৮৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ভারতীয় যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৯০ সালে স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য, ১৯৯০-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য, ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে প্রতিরক্ষা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, ১৯৯৬-২০০২ সালে রাজ্যসভার সদস্য, ২০০২-২০০৮ সাল তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যসভার সদস্য হন তিনি। ২০০৪ সালে রাজ্যসভার চিফ হুইপ,২০০৮-২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন তিনি।
'কংগ্রেসের সব ভালো নেতা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন'
কংগ্রেসের নেতৃত্বকে দিশাহীন আখ্যায়িত করে শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, 'স্বাধীনতার পর মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন যে কংগ্রেস স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করেছে, এখন স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, কংগ্রেস দলকে ভেঙে দেওয়া উচিত। এখন নতুন দল গঠন করতে হবে। কিন্তু পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু ক্ষমতার স্বার্থে কংগ্রেসকে ভাঙতে দেন নি এবং রাজনৈতিক সুবিধা নেন। তিনি বলেছেন, 'জওহরলাল নেহেরু মহাত্মা গান্ধীর ইচ্ছা পূরণ করেননি, কিন্তু রাহুল গান্ধী সেই ইচ্ছা পূরণ করতে চলেছেন'। একের পর এক কংগ্রেস নেতা শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি বিরক্ত হয়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন'।
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন সাংসদ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং প্রাক্তন বিধায়ক সহ ১৩ জনেরও বেশি কংগ্রেস নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ভোপালের প্রাক্তন সাংসদ সুরেশ পাচৌরি এবং ইন্দোরের সঞ্জয় শুক্লা এবং বিশাল প্যাটেলের মতো অনেক নেতা শনিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি ভিডি শর্মা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং মন্ত্রী কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র উপস্থিতিতে ভোপালে একটি কংগ্রেস নেতারা বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেছেন 'যেখানেই যান রাহুল গান্ধী পা রেখেছেন সেখানে কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। রাহুল গান্ধী মহাত্মা গান্ধীর অনুভূতিকে সঠিক প্রমাণ করার কাজ করছেন। মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, স্বাধীনতার পর কংগ্রেস ভেঙে দিতে হবে'।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়, ৭১ বছর বয়সী পাচৌরি বলেন, "আমি সমাজের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে প্রবেশ করেছি। কংগ্রেস একটি বর্ণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলত, কিন্তু এখন তারা জাতপাতের কথা বলছে। গত কয়েকদিনে দলের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সিদ্ধান্তে আমাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে কাজ করেছি। সেনাবাহিনীর সাহসিকতা নিয়ে কখনও প্রশ্ন তোলা হয়নি। 'প্রমাণ' দেওয়ার জন্য কখনও কথা হয়নি (যেমন 'সার্জিক্যাল স্ট্রাইক' সম্পর্কে কংগ্রেস নেতারা চেয়েছিলেন), "।