আস্থা ভোট ঘিরে টানটান নাটকের সাক্ষী থাকল বনগাঁ পুরসভা। ২ বিজেপি কাউন্সিলরকে পুরসভায় ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুরসভা চত্বর। ১৪৪ ধারা জারি থাকাকালীন তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। দলীয় কাউন্সিলরদের ঢুকতে না দেওয়ার প্রতিবাদে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে বিজেপি কর্মীদের। পুলিশ, র্যাফের সামনেই চলে বোমাবাজি। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
এসবের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত ওই ২ বিজেপি কাউন্সিলর পুরসভায় ঢুকলেও ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারেননি বলে প্রথমে দাবি করে বিজেপি। এদিকে, পুরবোর্ড তাঁদের দখলে বলে দাবি করে তৃণমূল। ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান দিয়ে পুরসভা থেকে বেরিয়ে যান তৃণমূল কাউন্সিলররা। পরে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, ‘‘আমরা হাইকোর্টের নিয়ম মেনে প্রক্রিয়া করেছি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেছি। আমরা ১১ জন ভোট দিয়েছি। ওরা (তৃণমূল) ভোটে হেরে ওয়াক আউট করে চলে গেছে। আমাদের দখলে বনগাঁ পুরসভা’’। পুরবোর্ড দখলের দাবি করার পরই ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা।
আরও পড়ুন- ‘মমতা পারছেন না, তাই তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত কিশোর’, বিস্ফোরক মুকুল
ঠিক কী ঘটেছে?
আস্থা ভোট ঘিরে এদিন সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনা ছিল বনগাঁ পুরসভায়। দুপুরের পর বনগাঁ পুরসভার সামনে আসেন দুই বিজেপি কাউন্সিলর কার্তিক মণ্ডল ও হিমাদ্রী মণ্ডল। এক কাউন্সিলরকে অপহরণে অভিযুক্ত দুই বিজেপি কাউন্সিলরের গ্রেফতারিতে এদিনই এক সপ্তাহের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের ‘অর্ডার’ নিয়েই পুরসভা চত্বরে আসেন ওই দুই কাউন্সিলর। এরপরই দুই বিজেপি কাউন্সিলরকে পুরসভায় ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুরসভার সামনে দুই কাউন্সিলরকে দেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও। অবিলম্বে ওই দুই কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের দাবি জানান তাঁরা। পাশাপাশি, বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের সমর্থনে স্লোগানও দিতে থাকেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- নিজের গড়ে কুপোকাত মুকুল, কাঁচরাপাড়ায় বহাল তৃণমূলের দাপট
বিজেপির দুই কাউন্সিলর কার্তিক মণ্ডল ও হিমাদ্রি মণ্ডলকে পুরসভায় না ঢুকতে দেওয়ায় রীতিমতো বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরাও। এক সময় গার্ডরেল ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেধে যায় বিজেপি কর্মীদের। পরে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পুলিশের সামনেই চলে বোমাবাজি। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উল্লখ্য, বনগাঁর তৃণমূল পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ৩ কাউন্সিলর। গত বৃহস্পতিবার সেই আবেদনের ভিত্তিতে বনগাঁ পুরসভায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতি জানান, চারদিনের মধ্যে অনাস্থা প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।