কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের আর মাসখানেকও হাতে নেই। পরিস্থিতি অনুকূল নয় বুঝে এবার উলটো সুর শোনা যাচ্ছে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের মুখে। দীর্ঘদিন দক্ষিণের এই রাজ্যে বিজেপির কঠোর হিন্দুত্বের নীতি ছিল অন্যতম আলোচ্য বিষয়। সেখানেই এবার উলটো সুর শোনালেন কর্ণাটকের বিজেপি নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা। তিনি বলেছেন, 'হিজাব, হালাল ইস্যু প্রয়োজনীয় নয়। আমি এই সব সমর্থন করব না।'
বর্তমানে রমজান পালন করছেন মুসলিম সম্প্রদায়। তার মধ্যে হিজাব আর হালাল ইস্যুকে টেনে নিয়ে এসেছেন ইয়েদুরাপ্পা। তিনি এবারের নির্বাচনে কর্ণাটকে বড় দায়িত্বে আছেন। সর্বভারতীয়স্তরেও বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে কর্ণাটক থেকে তুলে ধরেছেন মোদী-নাড্ডা-শাহরা। ইয়েদুরাপ্পার আরও বড় পরিচয়, তিনি কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও। সেই ইয়েদুরাপ্পা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'হিন্দু ও মুসলিমদের ভাই-বোনের মত থাকা উচিত। গোড়া থেকেই আমি এই অবস্থান নিয়েছি।'
আগামী ১০ মে নির্বাচন। তার আগে দলের গত কয়েকবছর ধরে কর্ণাটকে যা অবস্থান, তার উলটো সুর শুনিয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। যা স্পষ্ট করে দিয়েছে, কর্ণাটকে বিজেপি ঠিক কতটা চাপে আছে। গোটা দক্ষিণে একমাত্র কর্ণাটকেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে দল হারলে, গোটা দক্ষিণ ভারতে আপাতত আর কোনও বিজেপি শাসনাধীন রাজ্য থাকবে না।
মুখে ইয়েদুরাপ্পা যাই বলুন, বিজেপি এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যশপাল সুবর্ণকে টিকিট দিয়েছে। কর্ণাটকের কলেজ প্রাঙ্গণে হিজাব পরতে চাওয়া ছাত্রীদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সোচ্চার কণ্ঠস্বর এই যশপাল। হিজাব নিয়ে এই চাপানউতোর সম্প্রতি কর্ণাটকের উপকূলীয় অঞ্চলে হিন্দু আর মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। শুধু হিজাবই নয়, হালাল নিয়েও সম্প্রতি বেশ উত্তাপ ছড়িয়েছিল কর্ণাটকে।
আরও পড়ুন- নতুন অর্থবর্ষ, কোন করব্যবস্থায় থাকবেন এবার সিদ্ধান্ত নিতেই হবে, তাহলে এগুলো জানুন
গত বছর কর্ণাটক নববর্ষের উগাদি উৎসবের পর হালাল মাংস বয়কট করার জন্য হিন্দুদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিল, সংঘ পরিবারের সংগঠনগুলো। যার প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছিল বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সিটি রবি-সহ অন্যান্যদের মধ্যে। তাঁর 'অর্থনৈতিক জিহাদ' মোকাবিলার জন্য সংঘ পরিবারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো সমর্থন করেছিলেন। বিরোধীরা সেই সময় অভিযোগ করেছিল যে, ভোটারদের মেরুকরণের জন্য বিজেপি এই বিভাজনের রাজনীতি করছে। কিন্তু, তাতে দলের বিশেষ একটা লাভ হয়নি। একথা বুঝেই এবার উলটো সুর ইয়েদ্দির গলায়। এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।