দুটি মেয়েকে সাড়ে তিন বছর ধরে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এখন কাঠগড়ায় কর্নাটকের ধর্মগুরু। কর্নাটকের চিত্রদুর্গার জগদগুরু মুরুগরাজেন্দ্র বিদ্যাপীঠ মঠ। এই মঠ লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের। সেই মঠের প্রধানের বিরুদ্ধেই যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মঠপ্রধান শিবমূর্তি মুরুগা শরনারু এবং আরও চার জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং শিশুসুরক্ষা ভঙ্গ (পকসো) আইনে মামলা চলছে।
সেই তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তার মধ্যেই রবিবার কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা এই বিষয়ে ঢুকে পড়লেন। বিচারাধীন বিষয়টি নিয়ে ইয়েদুরাপ্পার দাবি, যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা। শুধু তাই নয়, পুরো জ্যোতিষীর কায়দায় ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, তদন্তে মঠের প্রধান নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। তিনি সম্মানের সঙ্গে যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্ত হবেন।
ইয়েদুরাপ্পার এই মন্তব্যের পরই চারদিকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কর্নাটকে এখন বিজেপির শাসন চলছে। ইয়েদুরাপ্পা বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা। শুধু তাই নয়, তিনি কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর এই মন্তব্যের পর তদন্ত আদৌ সঠিক পথে চলবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের নেতারা।
তবে, কংগ্রেসের পক্ষে এই ব্যাপারে ইয়েদুরাপ্পার বিরোধিতা করা কঠিন হয়ে গিয়েছে। কারণ, জগদগুরু মুরুগরাজেন্দ্র বিদ্যাপীঠ মঠ একটি বিশিষ্ট এবং প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত মঠ। সম্প্রতি, তাঁর কর্ণাটক সফরে রাহুল গান্ধী-সহ বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা এই লিঙ্গায়েত মঠে এসেছিলেন। এমনকী, রাহুল গান্ধী এখানে ধর্ষণে অভিযুক্ত মঠপ্রধানের থেকে দীক্ষা নিয়ে লিঙ্গায়েতও হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- ‘দুর্নীতির নমুনা’ নয়ডার টুইন টাওয়ার কাদের মদতে তৈরি হয়েছিল, ফাঁস সোশ্যাল মিডিয়ায়
শুধু তাই নয়, আগামী বছর কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়কে অনেক রাজনৈতিক নেতাই চটাতে চাইছেন না। কিন্তু, তাই বলে কি তদন্ত বিঘ্নিত করতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হবে? এই প্রশ্ন তুলছেন কর্নাটকের বিরোধী নেতাদের অনেকেই। আর, সেই প্রশ্ন উঠে এসেছে ইয়েদুরাপ্পার মন্তব্যের জন্য। ধর্ষণে অভিযুক্ত মঠপ্রধানের হয়ে সাফাই গেয়ে রবিবার ইয়েদুরাপ্পা বলেন, 'এটি একটি মিথ্যা অভিযোগ। এই অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। তদন্ত শেষ হলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।'
Read full story in English