দেশবিরোধিতার অভিযোগ ইস্যুতে বিজেপির সঙ্গে সংসদে টক্করে জয়ী হলেও দলবিরোধিতার অভিযোগ থেকে রক্ষা পেলেন না সাংসদ দানিশ আলি। উত্তরপ্রদেশের আমরোহার এই সাংসদকে বহিষ্কার করল বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)। সাসপেনশনের কারণ হিসেবে বিএসপি বলেছে, 'আপনাকে আগেও বহুবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্ত, তারপরও আপনি দলের নীতি, আদর্শ এবং শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। সেই কারণে, আপনাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল।'
তবে, দমার পাত্র নন দানিশও। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দলবিরোধিতার অভিযোগ অস্বীকার করে সদ্য বহিষ্কৃত বিএসপি সাংসদ মায়াবতীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তাঁকে এমপি করার জন্য। সঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, 'এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। আমি কোনও দলবিরোধিতা করিনি। বরং, যত্নের সঙ্গে বিএসপিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়েছি। আমার এলাকা আমরোহার বাসিন্দারাই তার সাক্ষী। তবে হ্যাঁ, আমি নিশ্চিতরূপে বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরোধিতা করেছি। আর, সেটা করা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, তবে আমি একজন অপরাধী। আর, এই অপরাধ আমি ভবিষ্যতেও করব। তার জন্য, যা যা শাস্তি হতে পারে, তা আমি গ্রহণ করতে রাজি।'
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র দানিশ আলি ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়। পেশাগতভাবে তিনি একজন আইনজীবী। কর্ণাটকে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়, আলির নাম উঠে এসেছিল। জানা গিয়েছিল, তিনি জেডি(এস) এবং কংগ্রেসের ভোট-পরবর্তী জোটের পিছনে প্রধান চালিকাশক্তি এবং মুখ হিসেবে কাজ করেছিলেন। জেডি(এস) সুপ্রিমো এইচডি দেবগৌড়া এবং দলের সাধারণ সম্পাদক এইচ ডি কুমারস্বামীর আস্থাভাজন দানিশ আলির বয়স সেই সময় ছিল মাত্র ৪২ বছর। তাঁকে জোটের পাঁচ সদস্যের কোয়ালিশন কো-অর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছিল। কারণ, এই কমিটিই নির্বাচন পরিচালনা করেছিল। জেডি(এস)-কংগ্রেস সরকার যদিও পূর্ণসময় স্থায়ী হয়নি।
আরও পড়ুন- সংসদে ফের মহুয়া ‘কাণ্ড’? বিরাট অভিযোগ এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষি লেখির বিরুদ্ধে
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, দানিশ আলি উত্তরপ্রদেশের আমরোহা থেকে বিএসপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আমরোহা তাঁর জন্মস্থান হাপুরের কাছেই। লোকসভা নির্বাচনে এটি তাঁর প্রথম নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়া সত্ত্বেও, উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপির ব্যাপক জয়ের পরও দানিশ আলি আমরোহা থেকে বড় ব্যবধানে বড় জয়লাভ করেছিলেন। মুসলিম অধ্যুষিত এই নির্বাচনী এলাকায় যথেষ্ট সংখ্যক দলিতদের বাস। দানিশ আলি সেখানে প্রায় ৫১% ভোট পেয়েছিলেন। সেখানকার বিজেপি সাংসদ কুনওয়ার সিং তানওয়ারকে ৬৩,০০০-এরও বেশি ব্যবধানে তিনি পরাজিত করেছিলেন।