রাজ্যে বিজেপির রথযাত্রার প্রচারে জলপাইগুড়ি সফররত বিজেপি নেতা মুকুল রায় মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, "উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরে পুলিশ অফিসার খুনের ঘটনায় দোষীরা নিশ্চয়ই শাস্তি পাবে। উত্তর প্রদেশের সরকার নিশ্চিত সেই ব্যবস্থাই করবে। বুলন্দশহর কখনও রামপুরহাট হয়ে যাবে না। রামপুরহাটে পুলিশ অফিসার খুন হলেন। অভিযুক্তরা বেকসুর খালাস পেয়ে গেল। উত্তর প্রদেশে তা কখনও হবে না। মমতার থেকে এসব শিক্ষা কখনও নেবে না উত্তর প্রদেশ সরকার।"
এর আগে জলপাইগুড়িতে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন মুকুলবাবু। ঘটনায় মুকুলবাবুর দাবী, এতে "আরেকবার প্রমান হলো যে রাজ্যে গণতন্ত্র নেই"। মঙ্গলবার বেলা দেড়টা নাগাদ বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা দফতরে ঢুকতে গিয়ে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন মুকুলবাবু। এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিনহার নেতৃত্বে একদল কর্মী মুখে কালো কাপড় বেঁধে "মুকুল রায় গো ব্যাক" স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
আরও পড়ুন, রথ নয়, বিজেপি উপ-রথ বের করবে গঙ্গাসাগর থেকে
পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজেপি অফিস থেকে ছুটে আসেন বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শ্যাম প্রসাদ সহ অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা। রাস্তার উপর স্লোগান-পালটা স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এরমধ্যে মুকুলবাবুকে পাশ কাটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় জেলা দফতরের সাংবাদিক সম্মেলন স্থলে। মুকুলবাবু যখন সাংবাদিক সম্মেলন করছেন, সেই সময়ও চলে বিক্ষোভ। পরে জেলা দফতর থেকে জেলা আদালতে যাওয়া পর্যন্ত চলে স্লোগান ও বিক্ষোভ।
BJP Leader Mukul Roy on Bulandshahr incident pic.twitter.com/UmQ18VVV5L
— IE Bangla (@ieBangla) December 4, 2018
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুকুলবাবু জানান, "রাজ্যের গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। তাই রথযাত্রা। আজকের ঘটনা ফের একবার প্রমান করলো রাজ্যে গণতন্ত্র নেই।" অন্যদিকে অভিজিৎ বলেন, "রাজ্যে অশান্তি লাগাতে এই রথযাত্রা। একে সফল হতে দেওয়া যাবে না। তাই এই বিক্ষোভ। এর মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হলো, ছাত্রসমাজ বিজেপির পাশে নেই।"
একদা তৃণমূলের একদা অবিসংবাদিত 'নাম্বার টু'-কে আরও জিজ্ঞাসা করা হয়, সে দলে থাকাকালীন তিনি যেখানে যেতেন সেখানেই বহুসংখ্যক মানুষ দলে যোগ দিতেন। সেই জায়গা কি বর্তমানে রাজ্য পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর? উত্তরে খানিকটা পাশ কাটিয়েই মুকুলবাবু জানান, "আমি যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই তৃণমূল ভেঙে কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। জলপাইগুড়িতেও তৃণমূলের প্রচুর নেতা কর্মী আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। বর্তমানে রাজ্য বিজেপি দ্বিতীয় শক্তি। এই নির্বাচনের পর বিজেপি প্রথম শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।"
সাংবাদিক সম্মেলন সেরে মুকুলবাবু জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে যান। সেখানে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ দ্রুত চালু করার দাবীতে তাঁর হাতে স্মারকলিপি দেন। তাঁদের প্রতি মুকুলবাবুর বার্তা, "আমি বলতে পারি না যে সার্কিট বেঞ্চ করে দেব। তবে এটুকু বলে রাখি, আগামী ৭ অথবা ১৬ তারিখের মধ্যে আপনারা একটা শুভ খবর পাবেন। ৭ ডিসেম্বর রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ এবং ১৬ ডিসেম্বর আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই এলাকার মানুষের যে দীর্ঘদিনের দাবী রয়েছে, তা নিয়ে শুভ খবর পাবেন।"
এরপর আদালত থেকে পাহাড়পুরে বিজেপির জয়েনিং-এর সভায় যান মুকুলবাবু।