মোদী-শাহর পালের হাওয়া কি ধাক্কা খেল নাকি রাম মন্দির রায়ের পর আরো জোরাল? মমতা ম্যাজিক ইতি নাকি ফের স্বমহিমায়? বাংলার কুর্সির দখল নেবে কে? না, এ প্রশ্নগুলির উত্তর বৃহস্পতিবারের ফলাফল দিতে না পারলেও, অনেকাংশে আভাস দিতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল গণনা বৃহস্পতিবার। সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও কংগ্রেস-বাম জোটের নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের ফলাফলের উপর আগামী সময়কালের রাজ্য রাজনীতির গতিপ্রকৃতি অনেকটাই নির্ভর করবে। লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপির উত্থানের পর এই উপনির্বাচনের ফলাফল তাই যথেষ্ট তাত্ৎপর্যপূর্ণ।
উপনির্বাচন মিটতেই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস উভয় দলই তিনটে আসনেই জয় পাবে বলে দাবি করেছে। বিজেপি-র সর্বভারতীয় কর্ম সমিতির সদস্য মুকুল রায় 'দায়িত্ব সহকারে' ঘোষণা করেছেন খড়্গপুর, কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরে জয় পাবে পদ্মশিবির। অন্যদিকে, দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও তিন আসনেই তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের বিষয়ে সম্পূর্ণ আশাবাদী। তৃণমূল-বিজেপি যখন এমন আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছে, তখন আবার কংগ্রেস-বাম জোটও রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে চাইছে এই উপনির্বাচনের মাধ্যমেই। বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় শুরু হবে গণনা। এই মুহূর্তে চরমে উঠেছে স্নায়ুর চাপ।
আরও পড়ুন: ‘এনআরসি চোর-ডাকাত চিহ্নিত করবে’, ভাইরাল বিপ্লব-বাণী!
ভোটের দিন করিমপুরে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে মারধরকে নিয়ে তীব্র জল ঘোলা হয়েছে। অন্যদিকে, কালিয়াগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী তাঁর স্ত্রীর হয়ে ভোট দিয়ে দিয়েছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে। তবে দুটি ঘটনাই ভিডিওতে ধরা পড়েছে এবং উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও করা হয়েছে। অল্প বিস্তর অভিযোগ হয়েছে খড়্গপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসনে জয় পেয়ে উজ্জীবিত বিজেপি। অন্য় দিকে ৩৪ থেকে ২২টি আসনে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভায় খারাপ ফলের পর ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে চুক্তি করেছে তৃণমূল। সেই চুক্তির পর 'দিদিকে বলো' সহ নানা জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। এমনকী এই তিন উপনির্বাচনে প্রচার-সহ নানা ভাবে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছে পিকের টিম। স্বাভাবিক ভাবে খড়্গপুর, কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরের ফল পিকের টিমের কাছেও বড় পরীক্ষা।
আগামী বছর রাজ্যে বেশিরভাগ পুরসভার নির্বাচন। অনেকগুলো পুরসভার মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে বাড়তি অক্সিজেন দেবে এই উপনির্বাচনের ফলাফল। উল্লেখযোগ্য বিষয় ২০২১-এ রয়েছে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। তাই আপাত দৃষ্টিতে তিনটে বিধানসভা কেন্দ্রের ফল বলে মনে হলেও তার রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেকটাই। যে দলই জিতুক আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হবে তারাই।