/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/01/mamata-somen-sujan-dilip.jpg)
দিল্লির বিজেপি বিরোধী বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীর গড়হাজিরার ঘোষণায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতা করে রাজ্যব্যাপী আন্দোলন করছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দিল্লিতে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ডাকা সিএএ বিরোধী বৈঠকে হাজির থাকবেন না বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতার এই ঘোষণায় তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেস-বামেরা ইতিমধ্যে এ প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, মোদীকে খুশি করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। আবার সিপিএম বলছে, বনধ সফল হওয়ায় দিল্লির বসের ধমক খেয়েছেন মমতা, তাই খুশি করার চেষ্টা। অন্যদিকে, বঙ্গ বিজেপির দাবি, দিল্লি গিয়ে কোনও লাভ হবে না বুঝে গিয়ে এখন নিজের গড় বাঁচাতে ব্যস্ত 'দিদিমনি'।
১৩ জানুয়ারি দিল্লিতে সিএএ এবং এনআরসি সংক্রান্ত বিরোধী দলের বৈঠকে হাজির থাকবেন না তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ বিরোধী প্রস্তাবও আনছেন না বিধানসভায়। তৃণমূলের তরফে এই অবস্থান স্পষ্ট করার পরই পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস ও আলিমুদ্দিন ফের 'মোদীভাই-দিদিভাই' আঁতাতের তত্ত্ব তুলে ধরেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, "তৃণমূলনেত্রী বৈঠকে না যাওয়ায় মোদী সাহেব খুশি হবেন। গেলে মোদী সাহেব অখুশি হতেন। সেই জন্য তিনি দিল্লির বৈঠকে যাচ্ছেন না। যা মুখে বলতে পারছেন না সেটাকে কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাইছেন"। উল্লেখ্য, সোনিয়ার বৈঠকে না যাওয়ার কারণ হিসাবে মমতা বুধবারের ধর্মঘটে রাজ্যে অশান্তির কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে সোমেন মিত্র বলেন, "যাওয়া না যাওয়ার অস্ত্র হিসাবে ধর্মঘটে গুন্ডামির কথা বলেছেন। এর প্রতিবাদে নাকি তিনি যাচ্ছেন না। অথচ যেখানে তিনি বলছেন সেখানে (বিধানসভায়) তাঁরই গুন্ডামির ছবি আছে। তাঁর থেকে কি বেশি গুন্ডামি হয়েছে রাস্তায়? তিনি তখন বিধানসভার সদস্যও ছিলেন না। বিধানসভার সমস্ত আসবাবপত্র ভেঙেছিলেন। তাঁর মুখে এই সব নীতি ধর্মের কথা মানায় না। সংখ্যালঘুরা এবার ভাববে, কার উপর আস্থা রেখেছি।"
আরও পড়ুন: সিএএ বিরোধী বৈঠক বয়কট মমতার, দেখালেন ‘বিশেষ কারণ’
প্রসঙ্গত, বুধবার একাধিক দাবিতে দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাম সংগঠনগুলো। এখানে কংগ্রেস রাস্তায় নেমে তা সমর্থনও করে। সিপিএমের বিধানসভার পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "ধর্মঘট সফল হওয়ায় কাল দিল্লির বসের কাছে ধমক খেয়েছেন। তাই এখন মোদিকে খুশি করতে দিল্লির বৈঠকে যাচ্ছেন না। আবার যদি চিটফান্ডের ফাইল খুললে কাউকে জেলে যেতে হয়..."।
অন্য়দিকে, দিল্লিতে সোনিয়ার ডাকা বৈঠকে মমতা না হাজির হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস সহ বাম-কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না রাজ্য বিজেপিও। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কংগ্রেস ও বামেদের উদ্দেশে বলেন, "আঁতাতের গল্প বলতে বলতে ওঁরা শেষ হয়ে গেল। বাংলার মানুষ যে এসব বিশ্বাস করে না লোকসভার ভোটে তা বুঝিয়ে দিয়েছে।" দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, "বৈঠকে না যাওয়ার কারণ, লোকসভার আগে দিদি এখানে খেলা দেখিয়েছিলেন বিরোধী ঐক্যের। তাঁরা এখন বুঝেছেন ওই জিনিষটা হওয়ার নয়। সোনার পাথরবাটি। কিছু না থাকলে কেন্দ্র বিরোধিতা পুরানো কৌশল। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সারা দেশে তুলকালাম করে বদনাম করার চেষ্টা হয়েছে। এখন নিজের গড় বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। দিদিমনি বুঝে গিয়েছেন, বাইরে গিয়ে লাভ নেই এটা বাংলার মানুষ খায়নি। এক মাস হেঁটে বুঝে গিয়েছেন যে বাংলার মানুষ তার সঙ্গে নেই। সবে তো পিক-আপ নিচ্ছে। মাস শেষ হতে দিদির কি অবস্থা করি দেখবেন।"