শহিদ মিনারে অমিত শাহর জনসভায় বক্তব্য় রাখতে গিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন রাজ্য়সভার সাংসদ অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায়। দেশে কেন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োজন? তাঁর ব্য়াখ্য়া দিতে গিয়ে নিজের জীবনকাহিনী বলতে গিয়ে চোখের জলে স্মৃতিকে তুলে ধরলেন বিজেপি নেত্রী রূপা। জীবন বাজি রেখে কীভাবে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য় হয়েছিলেন, কাঁদতে কাঁদতে শোনালেন সেই ঘটনা।
আরও পড়ুন: বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কেমন হবে, জানালেন অমিত শাহ
রবিবার শহিদ মিনারে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে জনসভা ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর। এদিন সেই সভায় কেন সিএএ দরকার তার সমর্থনে বলছিলেন বিজেপির এই সাংসদ। রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, "বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জে আমার বাবার পাটের কারখানার মালিক ছিলেন। সেই কারখানা শুধু দখলে নেওয়া নয়। সেখানে চাকরি করতে বাধ্য় করেছিল। পরে ওই কারখানা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বাবাকে। আমি বর্ধমানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতাম। বাবা পরে দিনাজপুরে গিয়ে ফুটো অ্যাসবেসটরের চাল, ভাঙা দেওয়ালের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। সেখানে পুরোহিতের কাজ করতেন বাবা। বাবার বাংলাদেশের পাসপোর্ট ছিল। বাবা এখানে আসতেন মাঝে-মধ্য়ে। আমি ও মা বাংলাদেশে যেতাম বাবার কাছে। কখনও আমাকে আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে মা-ও বাংলাদেশে গিয়েছেন। শেষবার প্রাণ হাতে নিয়ে আমরা পালিয়ে এসেছি।"
আরও পড়ুন: কলকাতায় ‘গোলি মারো’ স্লোগান! বিতর্কে অমিত শাহর সফর
কী হয়েছিল যখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন রূপা? শহিদ মিনারের সভায় একনাগারে বলতে থাকেন তাঁর ছোটবেলার বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা। রূপার বক্তব্য়, "একটি পোটলা আর বুকের মধ্য়ে মা-লক্ষ্মীর ঘট নিয়ে বোরখা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম আমি ও মা। সঙ্গে বাবা ছিলেন। রিক্সা করে ৪ ঘণ্টার পথ পেরিয়ে বাসস্ট্য়ান্ডে পৌঁছাই গভীর রাতে। তারপর ভোরের বাসে ঢাকা রওনা দিই। আর যাইনি বাংলাদেশ। জেনেছিলাম টাইগার বলে একটা লোক আমাকে কিডন্য়াপ করতে চেয়েছিল আমাকে। বাবা-মা সেদিন রাতে ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপছিল। দেওয়ালে শাবল ও গাইতি দিয়ে ভাঙতে শুরু করেছিল আক্রমণকারীরা। আমরা অন্য় দিক থেকে পালিয়ে আসি। ছোট ছিলাম। কিন্তু সেই দৃশ্য় এখনও মনে আছে আমার।"
আরও পড়ুন: কালীঘাট মন্দিরে পুজো অমিত শাহের
রূপার বক্তব্য়, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন হওয়ায় আজ আমাদের মত লোকেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। যারা বিরোধিতা করছে তাদের মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই। এদিন অমিত শাহ যখন সভায় বক্তব্য় রাখছিলেন তখনও এক নাগাড়ে চোখ থেকে জল গড়িয়ে চলেছে অভিনেত্রীর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন