/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2024/02/ie-Modi-shah-p.jpg)
এমএইচএ, সূত্র জানিয়েছে, আসামের একটি দাবিও মেনে নিতে পারে যে সিএএ-এর অধীনে নাগরিকত্বের আবেদন সময়সীমাবদ্ধ। আসাম এমএইচএকে সিএএ-এর অধীনে আবেদন করার সময়সীমা তিন মাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে বলেছিল কারণ তারা মনে করেছিল যে এটিকে উন্মুক্ত রাখা রাজ্যে সিএএ নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলতে পারে। (ফাইল)
CAA- লোকসভা নির্বাচনের আগেই সিএএ কার্যকর করা হবে। মঙ্গলবার এমনই দাবি বিশ্বস্ত সূত্রের। নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লাগু হওয়ার আগেই সিএএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে উত্তরাখন্ড বিধানসভায় সিএএ নিয়ে সবুজ সংকেত মিলেছে। বিজেপি শাসিত আরেক রাজ্য অসমও সিএএ কার্যকর করার পথে এগোতে শুরু করেছে। এর মাঝেই লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশ জুড়ে সিএএ কার্যকর করা নির্বাচনের আগেই বিজেপির মাস্টার স্ট্রোক!
প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা অমুসলিম উদ্বাস্তুদের দ্রুত ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) ২০১৯ সালে আনা হয়েছিল। বিরোধী দলগুলি একে মুসলিমবিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে আইনের বিরোধীতায় সরব হয়েছে। যদিও বিরোধীদের আনা এই অস্বীকার করেছে বিজেপি। মোদী সরকারের আনা CAA-এর অধীনে, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ পর্যন্ত বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা নির্যাতিত অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। সংসদে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিলটি অনুমোদন করেছিল এবং পরে রাষ্ট্রপতির সম্মতি পাওয়ার পরেও তা আইনে পরিণত করা সম্ভব হয়নি। এর প্রতিবাদে দেশের কিছু অংশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়।
এবার লোকসভা নির্বাচনের ফের মাস্টারস্ট্রোক বিজেপির। সূত্রের খবর, আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার CAA নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এর জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে এবং যে কোনও এই সংক্রান্ত ঘোষণা করা হতে পারে। যদি লোকসভার আগে দেশজুড়ে সিএএ লাগু হয় তবে তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ বিরোধী দলগুলি এই আইনটিকে মুসলিম বিরোধী বলে ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে আসছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার সেই সব অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে। CAA-র প্রতিবাদে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে বড় দাঙ্গা সহ দেশের অনেক জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে এখনই তা বাস্তবায়িত হলে নির্বাচনের সময় সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যার পুরো ফায়দা বিজেপি এবং এনডিএ তুলতে পারবে।
২০১৯ সালে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকার তৎকালীন বিদ্যমান নাগরিকত্ব বিধি সংশোধন করতে CAA (নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন) চালু করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল তিনটি মুসলিম অধ্যুষিত প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসা অমুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ প্রশস্ত করা। হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মের লোকদের প্রতিবেশী দেশগুলির নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করা হয়েছিল। মুসলমানদেরকে এর সুযোগের বাইরে রাখা হয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা ANI অনুসারে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে যে CAA- সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি কোনও সময় ঘোষণা করা হতে পারে। আগামী মার্চে যেকোনো সময় আচরণবিধি ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA) বিজ্ঞপ্তি জারি করার সঙ্গে সঙ্গে CAA আইন কার্যকর হবে। সূত্রটি বলেছে, সিএএ-এর বিধান পুরোপুরি প্রস্তুত এবং নাগরিকত্ব প্রদানের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সহ অনলাইন পোর্টাল ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হবে। আবেদনকারীকে কোনো নথি ছাড়াই ভারতে আগমনের বছর সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত কোনো নথি দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২৭ ডিসেম্বর CAA বাস্তবায়নের কথা ঘোষণা করেছিলেন। কলকাতায় অনুষ্ঠিত দলীয় বৈঠকে তিনি এ ঘোষণা করেন। এই বিষয়ে, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন। টিএমসির বিরুদ্ধে তোপ দেগে শাহ সিএএ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও সামনে আনেন। শাহ বলেছিলেন যে সিএএ বাস্তবায়ন কোন ভাবেই আটকানো সম্ভব নয়।
বিজেপি ইতিমধ্যেই দেশে সিএএ বাস্তবায়নকে নির্বাচনী ইস্যুতে পরিণত করেছে। গত লোকসভা নির্বাচন (২০১৯) এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি এটিকে একটি নির্বাচনী ইস্যু করেছিল। বিজেপির নেতারা বিশ্বাস করেন সিএএ কার্যকর হলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি আরও ভাল ফল করবে।
সংসদীয় বিধি অনুসারে, রাষ্ট্রপতির সম্মতি পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে যে কোনও আইনের রুল জারি করতে হবে। অথবা লোকসভা এবং রাজ্যসভার থেকে তা বাড়ানোর অনুরোধ করতে হবে। নিয়ম প্রণয়নের প্রতি ছ’মাস অন্তর ওই আইনের ধারা তৈরির জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে এসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সিএএ আন্দোলনের জেরে এখনও পর্যন্ত ১০০ মানুষ নিহত হয়। সিএএর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়।
আবেদনকারীরা দাবি করেছেন যে আইনটি শুধুমাত্র পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের জন্য প্রযোজ্য। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের অভিযোগ এনেছে বিরোধীরা কারণ আইনে মায়নামারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা, চিনের তিব্বতি বৌদ্ধ এবং শ্রীলঙ্কার তামিলদের জন্য কোন বিধির উল্লেখ করা হয়নি ।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us