একদিকে বামপন্থী সংগঠনগুলি কংগ্রেস ও বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আগামীকাল শুরু হওয়া ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট নিয়ে প্রচার করছে, অন্যদিকে বিজেপি নেতারা পুলিশকে এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের মেরে, হাত ভেঙ্গে, চোখ উপড়ে নেওয়ার নির্দেশ দিলেন বীরভূমে। রবিবার বীরভূমের মহম্মদবাজারের শ্রীকান্তপুর গ্রামে এক জনসভায় এমন বক্তব্য রাখেন একাধিক বিজেপি নেতা ও নেত্রী।
এই হুমকির জেরে পুলিশের পক্ষ থেকে মহম্মদবাজার থানায় জামিন অযোগ্য ধারায় বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, কালোসোনা মন্ডল, নির্মল মন্ডল, ফনী রায়, সন্তোষ ভান্ডারী এবং রামকৃষ্ণ রায়ের বিরুদ্ধে রবিবার রাতেই অভিযোগ দায়ের করেছেন এক পুলিশকর্মী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১১৫, ১৮৯, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬, ১৫৩, এবং ৩৪ ধারায় কর্মরত সরকারী কর্মীদের প্রাণনাশের হুমকি, আক্রমণের হুমকি, এলাকায় উত্তেজনা ও বিদ্বেষ ছড়ানো, এবং সম্পত্তি নষ্টের আশঙ্কা প্রভৃতি অভিযোগে পুলিশ মামলা দায়ের করেছে বিজেপির নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: রথের চাকায় পিষতে চাওয়া লকেটকে প্রশাসনিক পদক্ষেপের হুমকি পার্থর
ওই জনসভায় বিজেপির বীরভূম জেলা সম্পাদক কালোসোনা মন্ডল বলেন, "পুলিশকে ভালোভাবে কথা বললে ওরা শুনবে না, ওদের মারলে ওরা কথা শুনবে। তাই প্রশাসনকে মারুন, কিছুই করতে পারবে না প্রশাসন।" লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, "জেলার এক দাদা চান সবাই তাঁকে মানবেন, মহিলাদেরও সম্মান দেন না তিনি। সব ভেঙ্গে দিন গুঁড়িয়ে দিন, প্রশাসন কিছু করতে পারবে না!" আরেক বিজেপি নেত্রী অনামিকা ঘোষের হুমকি, "কোনো তৃণমূল কর্মী বিজেপি কর্মীদের চোখ রাঙ্গালে সে চোখ আমি উপড়ে নেব, গায়ে হাত দিলে হাত ভেঙ্গে দেব।"
জনসভায় কমবেশী সব নেতা-নেত্রীই আক্রমণাত্মক বক্তব্যে পাল্লা দেন, পুলিশের মতে যা আইন-শৃঙ্খলার অবনতিতে ইন্ধন যোগানো। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, "কোনো অনুমতি ছাড়াই বিজেপি ওখানে সভা করেছে, যার ফলে আমরা মামলা করেছি। বিজেপির সভার ভিডিও পেয়েছি, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
গত বিধানসভা নির্বাচনে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর এলাকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কক্ষের মধ্যে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে লকেট চট্টাপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তারপর এলো এই নতুন অভিযোগ। তবে জেলার বিজেপি নেতারা এখনই ঘটনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে রাজী হন নি।