আজ সারাদিন ধরে দেশের বিরোধী নেতারা ফের একত্রিত হলেন এক ধর্না মঞ্চের দৌলতে। তবে উপলক্ষ্য এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, আরেক মুখ্যমন্ত্রী, চন্দ্রবাবু নাইডু। আজ তাঁর রাজ্যের 'স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস'-এর দাবীতে দিল্লিতে একদিনের অনশন বিক্ষোভ করলেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলুগু দেশম পার্টির প্রধান। এই মৌকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফের একবার তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বললেন, মোদীর আচরণ দেখলে মনে হয়, "উনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী"।
দিল্লির যে স্থানে অনশনে বসেছেন নাইডু, সেই অন্ধ্র ভবনে দাঁড়িয়ে কেজরিওয়াল বলেন, "প্রধানমন্ত্রী দেশের হন, পার্টির নয়। যেভাবে উনি বহু রাজ্যের বিরোধী পক্ষের সরকারের প্রতি আচরণ করেন, ভাবখানা এমন যেন উনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।" কেজরিওয়ালের সঙ্গে ছিলেন আম আদমি পার্টির রাজ্য সভা সাংসদ সঞ্জয় আজাদ সিং।
উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ করে কেজরিওয়াল আরও বলেন, "এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং বাসিন্দাদের নিজেদের রাজ্য ছেড়ে দিল্লিতে এসে ধর্না দিতে হচ্ছে। আমাদের দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় গঠনের ওপর এটি একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ঘোষণা করেছিলেন অন্ধ্র প্রদেশকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার কথা, কিন্তু উনি তো মিথ্যে বলার জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন। যাই বলুন, কোনোদিনই কথা রাখেন না। অমিত শাহ তো নিজেই বলেছেন যে ওঁরা যা-ই বলেন সবই 'জুমলা' (কথার কথা)।" নাইডুর প্রতি তাঁর দলের সমর্থন জানিয়ে কেজরিওয়াল আরও বলেন, "প্রধানমন্ত্রী তিরুপতির মন্দিরে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন অন্ধ্র প্রদেশকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার কথা, কিন্তু দেবতার সামনে করা প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করেন না উনি।"
এর আগে নাইডুও বিজপির বিরুদ্ধে আক্রমণ হানেন, এবং অভিযোগ করেন যে অন্ধ্র প্রদেশকে বিশেষ মর্যাদা না দিয়ে 'রাজ ধর্ম' পালন করছেন না মোদী। সকাল থেকে একদিনের অনশনে অন্ধ্র ভবনে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। মূল দাবী ছিল, যে ২০১৪ সালে অন্ধ্র প্রদেশ এবং তেলেঙ্গানার বিভাজনের সময় করা সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে। মোদী যদি রাজ্যের বাসিন্দাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন, তাঁকে "উচিত শিক্ষা" পেতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন নাইডু। "(প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী) অটল বিহারী বাজপেয়ী একবার বলেছিলেন, গুজরাতে (২০০২ সালের) দাঙ্গার সময় 'রাজ ধর্ম' পালিত হয় নি। এবার অন্ধ্র প্রদেশের ক্ষেত্রেও রাজ ধর্ম পালিত হচ্ছে না। আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি," বলেন তিনি।