Advertisment

কলকাতার ছায়া জেলার পুরভোটেও, চাঁপদানিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভুরি ভুরি নির্দল

ওয়ার্ডের সংখ্যা ২২, মোট প্রার্থী ১৩৬ জন। আর এই ১৩৬ জনের মধ্যে ৭২ জনই নির্দল প্রার্থী! এটা হুগলির চাপদানি পুরসভা ভোটের ছবি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
No violence to be Mamata Banerjees message at party meet

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ওয়ার্ডের সংখ্যা ২২, মোট প্রার্থী ১৩৬ জন। আর এই ১৩৬ জনের মধ্যে ৭২ জনই নির্দল প্রার্থী! এটা হুগলির চাপদানি পুরসভা ভোটের ছবি। পশ্চিমবঙ্গের আর কোনও পুরসভায় এত নির্দল প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কিনা সন্দেহ।

Advertisment

জুটমিল অধ্যুষিত এই পুরসভায় অবাঙালি ভোটারের আধিক্যই বেশি। হিন্দিভাষী,উর্দুভাষী,ভোজপুরী সহ প্রায় সব ভাষাভাষীর লোকজনের বসবাস এখানে। তাই অন্যান্য পুরসভার সঙ্গে এই পুরসভার বিন্যাসকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। এখানে লড়াইটা যতটা না রাজনৈতিক, তার থেকে অনেক বেশি আত্নসম্মানের।

নির্দল প্রার্থীদের মনোভাব অন্তত তেমনটাই। রাজনীতি এখানে ঘেঁটে ঘ। লড়াইটা এখানে তৃণমূল বনাম নির্দলের। বেশ কয়েকজন নির্দল প্রার্থী শাসক দলের টিকিট না পেয়ে সূর্য, পাহাড়, মইসিঁড়ি চিহ্নে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবের অনেক নির্দকে ডামি ক্যান্ডিডেট হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে বিভিন্ন দলের তরফে।

এই পুরসভায় বৈচিত্রের অভাব নেই। যেমন ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গতবার নির্দল হিসেবে জিতে তৃণমূলে ভিড়ে গিয়েছিলেন জিতেন্দ্র সিং। তিনি কিছুদিন আগেও চাপদানি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি ছিলেন। এবারে ওই ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় তৃণমূল তাঁর স্ত্রী ডেইজি সিং কে প্রার্থী করেছে। জিতেন্দ্র কে টিকিট দেওয়া হয়নি। ক্ষুব্ধ জিতেন্দ্র তাই ইঁট চিহ্ন নিয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। জিতেন্দ্রর দাবি, তাঁকে নাকি দল থেকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডটি দেখতে বলা হয়েছিল এবং আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল ওই ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। আপাতত অব্শ জোড়া-ফুল থেকে বহিশ্কৃত তিনি। তাতে কুছ পরোয়া নেই বলেই মনে করেন জিতেন্দ্র। বলেছিলেন, 'আমি এখনো তৃণমূলেই আছি। দিদির জনমুখী প্রকল্প গুলিও আমার প্রচারে ছিল।'

এছাড়া তিনি তাঁর পার্টি অফিস থেকে স্ত্রী এবং নিজের সব কাজই করছেন। জিতেন্দ্রর কথায়, 'বহিষ্কারের কোনো চিঠি আমি পাইনি। শুধু তাই নয় পার্শ্ববর্তী ভদ্রেশ্বর, রিষড়া, ডানকুনি পুরসভা এলাকায় বিভিন্ন তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারও করেছি।' নির্দল প্রার্থী জিতেন্দ্রর কথায়, ' আমার ভোটে শুধু সিম্বল টাই জোড়া-ফুল নয়, কিন্তু হৃদয় আমার তৃণমূলেই আছে।'

আরও একজন নির্দল প্রার্থী শ্রীকান্ত মন্ডল। বিল্ডিং কন্ট্রাক্টর তিনি। এলাকায় প্রভাবশালী । গতবার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল হিসেবে জিতে পরে তৃণমূলে গেছিলেন। এবার ওই ওয়ার্ডে মেয়ে মৌসুমী মণ্ডলকে তৃণমূল টিকিট দিয়েছে। শ্রীকান্তও হারবার পাত্র নন। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। তাঁর বক্তব্য, 'আমার শত্রু বিজেপি। ওখানে ১৫০০ ভোটে বিধানসভাতে বিজেপির লিড ছিল। আমি না দাঁড়ালে ওখানে বিজেপি জিতে যাবে। দল বুঝল না। তাই আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। ওই আসনটিতে জিততে একমাত্র আমিই পারবো, তাই দাঁড়িয়েছি। দিদির প্রকল্প গুলিই প্রচার করেছি। জিতলে আবার দিদির কাছে ফিরে আসবো।'
শ্রীকান্তকেও বহিস্কার করেছে দল।

একাধিক নির্দল প্রার্থীর কথায়, জেতাটা যদি নিশ্চিত হয় তাহলে প্রতীকের প্রয়োজন কি? একযোগে নির্দল প্রার্থীদের দাবি, 'শাসক দলের প্রতীক থাকলে জেতার ব্যাপারে ২০ শতাংশ এগিয়ে থাকা যায়। সেক্ষেত্রে আমাকে আমার খাটনির থেকে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ বেশি খাটতে হবে এই আরকি। বছরভর মানুষের পাশে থাকি তাই বেশি চিন্তা করতে হয়না জেতার ব্যাপারে।'

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে কলকাতায় পুরনিগম ভোট হয়। বিপুল জয় পায় তৃণমূল। কিন্তু, ওই ভোটে শয়ে শয়ে নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন। এদেঁর বেশিরভাগই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডামি প্রার্থীছিলেন।

tmc Hooghly Municipal Election
Advertisment