জেল থেকে ছাড়া পেয়েই জানিয়েছিলেন রাজনীতি তিনি ছাড়বেন না। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আগামীতে রাজ্যের শাসক দলের হয়েই কাজ করার। শেষ ইঙ্গিতই এবার বাস্তবায়ণের পথে? শনিবার জামিনে মুক্ত ছত্রধর মাহাতো দেখা করলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তবে এই সাক্ষাৎকে উভয়ই 'সৌজন্যমূলক' বলে দাবি করেছেন।
শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলার প্রথম ঝুমুর মেলার উদ্বোধনে উপস্থিত হয়েছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান শেষে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির টুরিস্ট কমপ্লেক্সে ডাকা হয়েছিল সদ্য জেল থেকে জামিনে মুক্ত জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতোকে। গোপন এই বৈঠকে হাজির ছিলেন সস্ত্রীক ছত্রধর মাহাতো। এই বৈঠকের পরেই ছত্রধরের জোড়া-ফুল শিবিরে যোগদানের জল্পনা বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের হয়েই জঙ্গলমহলে কাজ করবেন জামিনে মুক্ত ছত্রধর
তবে, পুরো বিষয়টিতেই ধোঁয়াশার জিয়িয়ে রেখেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ছত্রধর মাহাতো। বৈঠক শেষে ছাত্রধর মাহাতো বলেন, 'পার্থবাবু কথা বলার জন্য আমাকে ডেকে ছিলেন। কুশল বিনিময় হয়েছে। তবে, দলের হয়ে কাজ করার বিষয়ে আরও কিছুটা সময় চেয়েছি। আমি আরও কিছুদিন সময় নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব। চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত এখনও জানায়নি।' পরে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ' সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ হয়েছে। উনি সবে জেলের বাইরে এসেছেন। বাইরের আলো-বাতাসটা একটু দেখুন। তৃণমূলে যোগদান নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি উনি।'
আরও পড়ুন: ‘ছত্রধর কেন এতদিন জেলে থাকল? জবাব দিক মমতা’
২০১৯ লোকসভায় জঙ্গলমহলে ভাল ফল করেছে বিজেপি। আদিবাসীদের মধ্যেও গেরুয়া শিবিরের প্রবাব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জামিনে মুক্ত ছত্রধরকে দলে টানতে মরিয়া তৃণমূল শিবির। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে ছত্রধরকে পুঁজি করেই দলীয় সংগঠন পোক্ত করতে চাইছে জোড়া-ফুল শিবির।
তবে, ছত্রধর মাহাতোর জেল থেকে জামিনে মুক্তি ও তৃণমূলের যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা মুকুল রায়। জঙ্গলমহলের জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো কেন এতদিন জেলে থাকলেন? মুখ্যমন্ত্রী মমতার কাছে তার জবাবাদিহি দাবি করেন বিজেপি-র এই নেতা। তিনি বলেন, ‘জঙ্গলমহলের ক্ষমতা দখলের জন্য ছত্রধর মাহাতোকে ব্যবহার করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ছত্রধর মাহাতো এতদিন ধরে জেলে কেন ছিল সেটাই বরং প্রশ্ন হওয়া উচিত ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। রাজনৈতিক স্বার্থে ছত্রধর মাহাতোকে ব্যবহার করা হয়েছে। জেলে পাঠানো থেকে জামিনে মুক্তি দেওয়া- সবটাই হয়েছে রাজনৈতিক কারণে।’