জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে দিল্লিতে তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ কিন্তু, আপাতত দিল্লি যাচ্ছেন না মুখ্যসচিব-ডিজি। শুক্রবার বিকেলে নবান্নের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি দিয়ে সকথা জানানো হয়েছে।
চিঠিতে নাড্ডার কনভয়-নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা করা হয়েছিল এবং ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। একেবারে শেষ বলা হয়েছে, যেহেতু রাজ্য সরকার বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, তাই স্বশরীরে দিল্লি যাওয়ার বিষয়টি থেকে মুখ্যসচিব-ডিজি-কে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
মুখ্যসচিবের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে দেওয়া চিঠিতে জানানো হয়েছে, নাড্ডাকে একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি ও পাইলট কার দেওয়া হয়। তাঁর যাত্রা পথে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই রেঞ্জের ডিআইজি পুরো বিষয়টির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড় নিরাপত্তার স্বার্থে ৪ জন এএসপি, ৮ জন ডিএসপি, ১৪ জন ইন্সপেক্টর, ৭০ জন সাব ইন্সপেক্টর-অ্যাসিটেন্, সাব ইন্সপেক্টর, ৮০ জন ব়্যাফ ছিলেন। এছাড়াও ছিল ২৫৯ কনস্টেবল ও ৩৫০ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার। বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে এখনও সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও তিনটি মামলা রুজু হয়েছে।
সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় কড়া অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এদিন সকালে মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে দিল্লিতে তলব করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ আগামী ১৪ ডিসেম্বর তাঁদের দিল্লিতে যেতে বলা হয়৷ সাম্প্রতিক কালে যা নজিরবিহীন৷
বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে যাওয়ার পথে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার শিরাকোলে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। দুষ্কৃতীরা তৃণমূল কংগ্রেসের আশ্রিত বলে অভিযোগ৷ এ দিনই সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিজের রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন৷ সেখানে বৃহস্পতিবারের ঘটনার জন্য রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসনের গাফলতিকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন রাজ্যপাল৷ তার পরেই ডিজি এবং মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷
তার আগে বৃহস্পতিবার নাড্ডার নিরাপত্তার গাফিলতি অভিযোগ জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।সেই চিঠি নবান্নে পাঠিয়ে রাজ্যের কৈফিয়ত তলব করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই পদক্ষেপ ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। ডিজি ও মুখ্যসচিবকে তলবের বিষয়টিকে ‘অসাংবিধানিক-বেআইনি ও কেন্দ্রের এক্তিয়ান বহির্ভুত’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দিতেই এই তলব বলে অভিযোগ তাঁর। অন্যদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়ের দাবি, ‘বৃহস্পতিবারের ঘটনাই প্রমাণ করল বাংলায় গণতন্ত্র, আইনের শাসন নেই। তাই মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে তলব করে কেন্দ্রীয় সরকার অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পাল করছে।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন