বুধবার বিকেলে দিল্লি পৌঁছাবেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। সরকারি তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে। দিল্লি পৌঁছে দলীয় হাইকমান্ডের সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা। গেহলট দলীয় সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেবেন কি না তা হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠকের পরই পরিষ্কার হবে।
পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি পদে দৌড়ে তিনিই ছিলেন এগিয়ে। তবে গেহলট শিবিরের বিধায়কদের আচরণে প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ দিল্লির হাইকমান্ড। আজ বিকেলেই সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি উড়ে যাচ্ছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। সূত্রের খবর আজ দিল্লিতে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন গেহলট।
গেহলট দিল্লির জাতীয় সভাপতির মনোনয়ন জমা দেবেন কিনা তা নিয়ে এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। রাজস্থানের সামগ্রিক রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিয়ে হাইকমান্ডকে ব্যাখ্যা দিতেও তিনি হাইকমান্ডের মুখোমুখি হতে পারেন বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গেহলটের দিল্লি পৌঁছানোর পরই গোটা বিষয়টি সামনে আসবে।
দিন তিনেক আগে রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে জল ঘোলা হওয়ার পর বুধবার বিকেলে দিল্লি যাবেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। দুপুর ২টো নাগাদ জয়পুর থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। সেখানে তিনি কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে দেখা করবেন। জানা গিয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থা হাইকমান্ডের কাছে পেশ করবেন তিনি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, গেহলট প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন দেবেন কি না তা এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম আলোচিত নেতা শচীন পাইলটও এখন দিল্লিতে। মঙ্গলবার তিনি দিল্লি পৌঁছান। রবিবার গেহলট পন্থী বিধায়কদের আচরণে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়তে হয় কংগ্রেস হাইকমান্ডকে। সূত্রের খবর বিধায়কদের আচরণে ক্ষুব্ধ সনিয়াও। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে একটি রিপোর্টও তলব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: < ‘জেলে নিজেকে গুলি করতে চেয়েছিলেন সুব্রতদা’, গ্রেফতারি কাণ্ডে প্রয়াত মন্ত্রীকে নিয়ে বললেন মমতা >
রবিবার রাতে রাজস্থানে রাজনৈতিক উত্তাপের পর, দফায় দফায় আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জয়পুরে মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের সঙ্গে দেখা করেন গেইলট ঘনিষ্ঠ একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়ক। গেহলট মন্ত্রী ও বিধায়কদের নিজ নিজ এলাকায় ভালভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন। আপাতত তিনিই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বলে জল্পনা চলছে।
কংগ্রেস হাইকমান্ড রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে দলের নতুন জাতীয় সভাপতি করতে চেয়েছিল। গেহলটের বদলে অন্য কোন নেতাকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী করার ব্যপারেও চিন্তা ভাবনা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী পদে নতুন মুখ নির্বাচনের জন্য, সনিয়া গান্ধী রবিবার সিনিয়র নেতা অজয় মাকেন এবং মল্লিকার্জুন খার্গকে পর্যবেক্ষক হিসাবে রাজস্থানে পাঠিয়েছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় বৈঠকের আগে অশোক গেহলট শিবিরের বিধায়করা বিদ্রোহী অবস্থান নেন। এমনকী ৮২ জন গেইলট ঘনিষ্ট বিধায়ক বিধানসভায় স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে তাদের পদত্যাগ পত্রও জমা দেন । যদিও এখনও পর্যন্ত তা গ্রহণ করা হয়নি। বিধায়কদের তরফে শচীন পাইলট বা তাঁর শিবিরের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার তীব্র আপত্তি জানান হয়।
বিধায়কদের অবস্থানের কারণে সোমবার বৈঠক না করেই দিল্লি ফিরে আসতে হয়েছে মাকেন ও খড়গেকে। দিল্লিতে পৌঁছে, মাকেন এবং খার্গ সোনিয়া গান্ধীকে পুরো পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। এর পরে, সোনিয়া গান্ধী মাকন এবং খার্গের কাছে পুরো বিষয়টির বিস্তারিত লিখিত প্রতিবেদন চান। এরই মাঝে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের ভবিষ্যৎ এবং কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা।
এই গোটা ঘটনার জেরে ক্ষুদ্ধ দিল্লির হাইকমান্ড। দলীয় সূত্রে খবর অশোক গেহলটকে জাতীয় সভাপতি করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা শুরু করেছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। এবার গেহলটের পরিবর্তে অন্য নেতাদের মধ্যে কাউকে সভাপতি করার কথা ভাবছে কংগ্রেস হাইকমান্ড বলেও খবর। তাদের মধ্যে মল্লিকার্জুন খাড়গে, মুকুল ওয়াসনিক, দিগ্বিজয় সিং এবং কেসি ভেনুগোপালের মত সিনিয়র নেতার নামও রয়েছে।