CM at Siliguri: বাংলায় শান্তি এবং সম্প্রীতির পরিবেশ আর ত্রিপুরায় দেখুন কী অবস্থা। শিলিগুড়ির অনুষ্ঠানে এভাবেই বিজেপিকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ৫ দিনের সফরে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন। রবিবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে থেকেই রাজ্যব্যাপী সুষ্ঠু ভাবে আয়োজিত দুর্গাপুজোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন মমতা।
তিনি বলেন, ‘দেখুন কত সুষ্ঠু আর শান্তিপূর্ণ ভাবে এতবড় উৎসব হয়ে গেল। এর জন্য রাজ্যের প্রশাসন, পুলিশ, পুজো আয়োজক, সংখ্যালঘু ভাইবোন সকলে প্রশংসাপ্রাপ্য। বাংলায় শ্মশানের শান্তি নয়, মৈত্রীর শান্তি, সম্প্রীতির শান্তি। বাংলা ত্রিপুরা নয়, সেখানে গেলেই মাথায় মার। সন্তোষ মোহন দেবের মেয়েকে মেরেছে। মহিলা সাংসদকে ওরা ছাড়েনি।‘ এভাবেই এই অনুষ্ঠান থেকে বিজেপিকে কটাক্ষ করেন তিনি।
তাঁর অভিযোগ, ‘ফল ঘোষণার পর উত্তরবঙ্গে ক’টা হিংসা, হানাহানি হয়েছে। বিজেপি হুক্কা-হুয়া করে ঘুরছে। হিংসা, হিংসা করে। তোরা আগে ত্রিপুরার দিকে দেখ।‘ পাশাপাশি এদিন খানিকটা নস্টালজিক হয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে জীবন্ত লাশ বলতে পারেন। স্বাধীনতার পর এত ঘাত-প্রতিঘাত কারও উপর আসেনি। এসব কিছু সহ্য করেই আমি এই জায়গায়। আমার চোখে, কোমরে সাড়া শরীরে অস্ত্রোপচার। আমাদের ছোট বেলায় বিবেকানন্দ, নেতাজির লেখা বই পড়তে বলা হত। অনেক ছোট থেকেই আমি রাজনীতিতে। ১২ কী ১৩ বছর বয়স থেকেই। আমার বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তাঁর থেকে গল্প শুনেই আমি উদ্বুদ্ধ হই।‘
এদিকে, আবারও ত্রিপুরায় তৃণমূলের প্রচার কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ। শুক্রবার সকালে ত্রিপুরার আমতলি বাজার চত্বরে তৃণমূলের ‘বিশেষ জন সম্পর্ক অভিযানে’ হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবকে শারীরিকভাবে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক টুইটে তুলোধনা করেছেন বিপ্লব দেব নেতৃত্বাধানীন রাজ্য সরকারকে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ত্রিপুরায় দলের প্রচারাভিযানে হামলার অভিযোগে বিপ্লব দেবের সরকারকে নিশানা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে অভিষেক লিখেছেন, ‘বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় বিরোধীদের উপর আক্রমণ নতুন রেকর্ড স্থাপন করছে! একজন মহিলা রাজ্যসভার সাংসদ, সুস্মিতা দেবকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হল। লজ্জাজনক এবং রাজনৈতিক সন্ত্রাস। সময় ঘনিয়ে এসেছে। ত্রিপুরার মানুষ উত্তর দেবে!’একুশের ভোটে তৃতীয়বারের জন্য বাংলায় বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার পরেই পড়শি রাজ্য ত্রিপুরায় নজর তৃণমূলের। বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় দলের সাংগঠনিক শক্তি পোক্ত করতে চেষ্টার কসুর করছে না তৃণমূল। পালা করে ত্রিপুরা সফরে যাচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা।
তবে ত্রিপুরায় দলের শক্তি বাড়াতে গিয়ে বারবার ‘বাধা’ পাচ্ছে তৃণমূল। এর আগেও বাংলা থেকে ত্রিপুরায় দলের কাজে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয়েছে জোড়াফুল শিবিরের যুব নেতাদের। পড়শি রাজ্যে দলের কাজে গিয়ে ‘হেনস্থা’র মুখে পড়তে হয়েছে বেশ কয়েকজনক সাংসদকেও। খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ত্রিপুরা সফরে গিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। রাজধানী আগরতলাতেই তাঁর কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। এদিন শিলিগুড়িতে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেই হিংসাকে কটাক্ষ করেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন