পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার কার্শিয়ঙের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আবারও সেই বার্তাই দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকা সংশোধন হলেই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। শুধু জিটিএ নির্বাচনই নয়। পাহাড়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটও হবে বলে আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর। এছাড়াও এদিন পাহাড়ে কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিল্পপতিদের বিনিয়োগের আহ্বান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কার্শিয়ঙে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির ছিলেন অনীত থাপা, রোশন গিরিরাও। সেই বৈঠকেই নিজের দলের সাংসদ শান্তা ছেত্রীকে ধমক তৃণমূলনেত্রীর। 'অনীত থাপারা বন্ধু, ওদের সঙ্গে ঝগড়া নয়।' প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই সাংসদকে ধমক মুখ্যমন্ত্রীর।
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রত্যয়ী রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার কার্শিয়ঙে চলা প্রশাসনিক বৈঠকে তা আরও একবার স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্তমানে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ জটিল। বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা পাহাড়ে ফিরেছেন। অন্যদিকে, বিনয়-সঙ্গ ছেড়ে আলাদা দল গড়েছেন অনীত থাপা। বিনয়ও মোর্চার দায়িত্ব বিমলের হাতে দিয়ে পাহাড়ের উন্নয়নে পৃথক দল গড়ার ঘোষণা করেছেন। সব মিলিয়ে পাহাড় রাজনীতির জটিল অঙ্কের সমাধান কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও পাহাড়ের স্থায়ী সমাধানে রীতিমতো উদ্যোগী। এদিন কার্শিয়ঙের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোভিড পরিস্থিতি ঠিক হলে সংশোধিত ভোটার তালিকা চলে আসবে। এরপরেই জিটিএ-র ভোট হবে। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটও করতে হবে। তবে তার জন্য আইন সংশোধনের প্রয়োজন। সেদিকেও নজর দিতে হবে। আমরা পাহাড়ে শান্তি চাই। অশান্তির পক্ষে আমরা নয়।”
এদিন প্রশাসনিক বৈঠক থেকে নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভোট এলেই কিছু রাজনৈতিক দল চলে আসে। দার্জিলঙকে আলাদা রাজ্য করার কথা বলে। ওদের উদ্দেশ্য রাজ্য ভাগ করে দেওয়া। ১০ বছরে যা উন্নয়ন হয়েছে তা ভেঙে দিয়ে চলে যায়। দার্জিলিঙে বিভাজনের রাজনীতি চলবে না। অনীত আলাদা দল করেছ। রোশন-অনীতদের বলব একসঙ্গে কাজ করতে। তোমাদের বিভাজন করতে অনেক দল আসবে। তোমরাই বলো দার্জিলিঙে কী করণীয়?”
আরও পড়ুন- কংগ্রেস ভাঙছে, নীতির প্রশ্নে দলের রাজ্য নেতৃত্বের ‘অনৈক্য-অসামঞ্জস্যতা’কে দায়ী করলেন সনিয়া
এবারের উত্তরবঙ্গ সফরে আগাগোড়া অনীত থাপা, রোশন গিরিদের গুরুত্ব দিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে রবিবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীতেও দেখা গিয়েছিল অনীত থাপাকে। এদিন প্রশাসনিক বৈঠক থেকে নিজের দলের সাংসদ শান্তা ছেত্রীকে ধমকের মাধ্যমে পাহাড় রাজনীতিতে বর্তমানে অনীত থাপার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এছাড়াও জিটিএ পরিচালনার ক্ষেত্রেও দার্জিলিঙের জেলাশাসককে অনীত থাপার সঙ্গে আলোচনা করে চলারও পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন