নন্দীগ্রামের বয়ালের বুথে অশান্তি নিয়ে রাজ্যপালকে ফোনে অভিযোগ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে কাউকে ভোট দিতে দেয়নি। ৬৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ৮০% ছাপ্পা ভোট হয়েছে। ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন। আমরা আদালতে যাব।‘ তিনি আরও অভিযোগ করেন, 'বহিরাগতদের নিয়ে এলাকায় অশান্তি ছড়ানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এই কাজ হয়েছে।' এদিকে প্রায় একঘণ্টার মতো বয়ালের সেই বুথে বসে মমতা। বাইরে যুযুধান তৃণমূল ও বিজেপি। মারমুখী দুই পক্ষ, একে অপরকে হুমকি, ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি আয়ত্বে আনতে দুই দলের সমর্থকদের মাঝে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
প্রথমেই বয়ালে শংকরবেতার গ্রামের সাত নম্বর বুথে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এরপর ওই এলাকার গ্রামে ঢুকে পড়েন তিনি। কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে, মারধর করছে বলে তাঁকে জানান স্থানীয় ভোটাররা। মমতার কাছে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান সকলে। এর মাঝেই বয়ালে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে বিজেপি কর্মীরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে শুরু করেন।
সবাই যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিৃধানসভা ঙোক বা লোকসভা নির্বাচন সব ক্ষেত্রেই বরাবর ঘরে বসে ভোটদানে নজর রাখতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীকে। একবারই বিকেলের দিকে বেড়িয়ে ভোট দান করতে যেতেন তিনি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। তাই মমতাকেও দেখা গেল ব্যতিক্রমী ভূমিকায়।
এদিকে, বয়ালের ৭ নম্বর বুথ থেকে অবশেষে বাইরে বের করা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন বেলার দিকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ওই বুথে বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাইরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় নন্দীগ্রামের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠির নেতৃত্বে বাহিনী ওই এলাকায় যায়। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, 'বুথের ১০০-২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি। তারপরেই কী করে এত জমায়েত? লাঠি, ইট হাতে মানুষ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে?' মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন শুনে তাঁকে আশ্বাস দেন ওই আইপিএস। এরপর এলাকায় নিরাপত্তা বাড়িয়ে তাঁকে বের করে আনা হয় ওই স্কুল থেকে।
এদিকে, মমতার ফোন পেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে ট্যুইট রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। তিনি লেখেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ গুরুত্ব-সহ বিচার করা হয়েছে। আইনের মধ্যে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আমার আশা গণতন্ত্র রক্ষায় সবপক্ষই ইতিবাচক ভূমিকা নেবে।'