মোদী সরকারের জমানায় অবিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোয় রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। সংঘাতের সেই আবহ থেকে বাইরে রইল না বামশাসিত কেরলও। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অভিযোগ, রাজ্যপাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশ তিনি দিতে পারেন না। আসলে, কেন্দ্রের প্রতিনিধি রাজ্যপাল তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। কেরালার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
তিনি দক্ষিণের এই রাজ্যের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। আগে, জগদীপ ধনকড় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন, তাঁর সঙ্গে নানা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত বেধেছে। এমনকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে নাক গলানোর অভিযোগ বিধানসভায় বিল এনে আচার্যের পদ থেকে রাজ্যপালের নাম বাদ পর্যন্ত দিয়েছে তৃণমূল সরকার। এবার যেন তেমনই সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে দক্ষিণের প্রান্তিক রাজ্য কেরলেও।
পালাক্কাদে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে সরবও হন বিজয়ন। তিনি বলেন, 'যদি রাজ্যপাল নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগকে বেআইনি বলে মনে করেন, তাহলে তিনিই এর জন্য দায়ী। রাজ্যপাল হলেন উপাচার্যদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ। নিয়োগ অবৈধ হলে তিনিই দায়ী। রাজ্যপালকে ভাবতে দিন, কার পদত্যাগ করা উচিত, তিনি নাকি উপাচার্যদের। রাজ্যপাল সংঘ পরিবারের নির্দেশেই কাজ করছেন। তিনি ধ্বংসাত্মক মানসিকতা নিয়ে কাজ করছেন।'
আরও পড়ুন- বর্গি হানার সাক্ষী খণ্ডঘোষ, দুর্গার মতই সপরিবারে পূজিতা হচ্ছেন কালী, গ্রামের বড়মা
সংঘ ঘনিষ্ঠ আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে কেরলের বাম সরকারের ঠোকাঠুকি লেগেই ছিল। তার মধ্যে ন'টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ায়, সেই ঠোকাঠুকি বেড়েছে। গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট তিরুবনন্তপুরমের এপিজে আবদুল কালাম টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের নিয়োগ 'অবৈধ' এবং 'বাতিল' ঘোষণা করেছে। সেই নির্দেশের ওপর ভিত্তি করে আরিফ মহম্মদ খান ন'জন উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়েছেন। কারণ, ওই নিয়োগগুলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম মেনে হয়নি।
এপিজে আবদুল কালাম টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটি বাদেও যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন খান, তার মধ্যে রয়েছে কেরল বিশ্ববিদ্যালয়, মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কেরল ইউনিভার্সিটি অফ ফিশারিজ অ্যান্ড ওশিয়ান স্টাডিজ, কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রীশংকরাচার্য সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, কালিকট বিশ্ববিদ্যালয় এবং থুনচাথ এজুথাচান মালয়ালম বিশ্ববিদ্যালয়।
Read full story in English