রাজ্যসভায় ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস সাংসদ ধীরাজ সাহুর পরিবারের সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত একটি দেশীয় মদ কোম্পানি- বলদেও সাহু অ্যান্ড গ্রুপ অফ কোম্পানিজ লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত সম্পত্তিতে আয়কর বিভাগ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ইতিমধ্যে এই অভিযানে বিপুল সম্পত্তি এবং অর্থ উদ্ধার হয়েছে। যাকে দুর্নীতির অর্থ বলে দাবি করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নিশ্চয়তা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। একইসঙ্গে গোটা বিষয়ে কংগ্রেসের কাছে জবাবদিহি দাবি করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া X (আগের টুইটারে)-এ প্রকাশিত একটি পোস্টে, নাড্ডা কংগ্রেস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার যা বলেছিলেন, তারই প্রতিধ্বনি করেছেন। নাড্ডা লিখেছেন, 'ভাই, আপনাকে এবং আপনার নেতা রাহুল গান্ধী উভয়কেই জবাবদিহি করতে হবে। এটি নতুন ভারত। এখানে রাজপরিবারের নামে জনগণকে শোষিত হতে দেওয়া হবে না। আপনি দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন, কিন্তু আইন চলবে। আপনাকে ছাড়ব না। কংগ্রেস যদি দুর্নীতির গ্যারান্টি হয়, তবে মোদীজি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার গ্যারান্টি। জনগণের কাছ থেকে লুঠ করা প্রতিটি পয়সা ফেরত দিতে হবে।'
একই সুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত শুক্রবার এই অভিযান সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছিলেন, 'জনসাধারণের কাছ থেকে লুঠ করা অর্থের প্রতিটি পয়সা ফেরত দেওয়া হবে। এটাই মোদীর গ্যারান্টি।' অন্যদিকে সাহুর ব্যবসা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখছে কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এত বিপুল পরিমাণ নগদ বাজেয়াপ্ত হওয়ার পিছনের কারণগুলো কেবল সাংসদই ব্যাখ্যা করতে পারেন। কংগ্রেসের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান জয়রাম রমেশ এই ব্যাপারে দলের অবস্থান জানিয়ে এক্স-এ লিখেছেন, 'ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কোনওভাবেই এমপি ধীরাজ সাহুর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নয়। শুধুমাত্র তিনিই ব্যাখ্যা করতে পারেন, এবং ব্যাখ্যা করা উচিত, কীভাবে বিপুল পরিমাণ নগদ আয়কর কর্তৃপক্ষ তাঁর সম্পত্তি থেকে উদ্ধার করল।'
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও কংগ্রেস সাংসদের ঠিকানা থেকে বিপুল অর্থ বাজেয়াপ্ত করা সম্পর্কে লিখেছেন, 'ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের কিছু লোক এই অর্থের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে। এই বেনামী সম্পদের উৎস কোথায়? বিষয়টির সত্যতা কী? বাজেয়াপ্ত করা কালো টাকার সঙ্গে ওড়িশার কিছু লোকের সম্পর্ক আছে কি? কিছু লোক, যাঁরা সততার ঢোল পিটিয়ে অভিযান চালায়, তাঁরা কেন নীরব?' প্রধান X-এ লিখেছেন, 'যাঁরা নীতি-নৈতিকতার কথা বলেন, এমন কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাদের নীরবতা মানুষের মনে সন্দেহ জাগায়। ওড়িশা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখন মোদী কি গ্যারান্টি-র ওপর নির্ভর করছে। মোদী সরকারের অধীনে দুর্নীতি হতে দেওয়া হবে না।'
আরও পড়ুন- হইচই শুধু ৩৭০ নিয়ে! মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরে আইনের খোলনলচেই বদলে দিয়েছে?
বেগুসরাইয়ের বিজেপি সাংসদ আবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ধীরাজ সাহুর একটি ছবি পুনরায় পোস্ট করে কংগ্রেস দলকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি লিখেছেন, '৩০০ কোটি টাকার ধীরাজ সাহু, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে, যার মূল্য হাজার কোটি টাকা।' ডিস্টিলারি গ্রুপ এবং সংযুক্ত সংস্থাগুলোর নানা বিভাগে অভিযানের সময় বাজেয়াপ্ত হওয়া নগদ অর্থের পরিমাণ একটি একক অভিযানে কোনও তদন্তকারী সংস্থার দ্বারা উদ্ধার হওয়া এযাবৎকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ।