ছত্তিশগড়ের রায়পুরে কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বিরোধী ঐক্য নিয়ে আলোচনার সময়, কংগ্রেস শনিবার আঞ্চলিক দলগুলির কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে, "বিরোধী জোটকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে এটাই একমাত্র "ভালো বিকল্প" বলেই মনে করছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে ইউপিএ মডেলের কথা যেখানে কংগ্রেস জোটের নেতৃত্ব দিয়েছিল।
কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী এক ভাষণে বলেন, “কংগ্রেস কেবল একটি রাজনৈতিক দল নয়। এটি সমস্ত ধর্ম, বর্ণ এবং লিঙ্গের মানুষের কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে”। সনিয়া গান্ধী দৃঢ়ভাবে জানান, তাঁর দল সমস্ত পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বপ্ন পূরণ করবে। প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধানের অভিযোগ, মোদী সরকারের কাজকর্ম সংবিধানে বর্ণিত মূল্যবোধের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে চলেছে”। "বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে, কংগ্রেসই দেশের একমাত্র দল যে দল দেশকে যোগ্য এবং সিদ্ধান্তমূলক নেতৃত্ব দিতে পারে," খাড়গে তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় স্পষ্ট করেন। তিনি সেই প্রসঙ্গে ২০০৪-২০১৪ জোটের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘কার্যকর বিকল্প জোট গঠনের জন্য কংগ্রেস উন্মুখ।" ধর্মনিরপেক্ষ আঞ্চলিক শক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার ওপরেও বিশেষ জোর দেওয়া হয়।
কংগ্রেস নেতৃত্ব স্পষ্টভাবে বলেছে কিছু বিরোধী দল - তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, এবং তাদের মধ্যে কেসিআর-এর ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) - বিজেপি-বিরোধী জোটে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে আগ্রহ প্রকাশ করছে না। তবে এনসিপি, ডিএমকে এবং জেডি(ইউ) এর মতো অনেক দল বিশ্বাস করে যে কংগ্রেস ছাড়া একটি ‘কার্যকর বিরোধী দল’ গঠন করা সম্ভব নয়।
পাশাপাশি ছত্তিশগড়ের রায়পুরে কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যেন তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবন সমাপ্ত করার ইঙ্গিত দিলেন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ইনিংস ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রার মধ্যে দিয়ে শেষ হতে পারে। এই ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রাকে দলের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবেও তিনি চিহ্নিত করেছেন। কংগ্রেসের ৮৫তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সময় সনিয়া গান্ধী একথা বলেন। এই ব্যাপারে সনিয়া বলেন, ‘২০০৪ ও ২০০৯ সালে ডক্টর মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বে নির্বাচনে জয় আমাকে ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি দিয়েছে। কিন্তু, আমার ইনিংস কংগ্রেসের মোড় ঘোরানো ভারত জোড়ো যাত্রার মধ্যে দিয়ে শেষ হলে, তা আমাকে আরও বেশি সন্তুষ্টি দেবে।’