শুধু রাফালে বা সিবিআই ইস্য়ু নিয়ে দুদিনের বিক্ষোভ সভা নয়, লাগাতার পথে নেমে আন্দোলন করতে চাইছে রাজ্য় কংগ্রেস। অধীর চৌধুরীকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে অভিজ্ঞ সোমেন মিত্রকে সভাপতি করেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধি। অধীরের পাশে তখন রাজ্য় কংগ্রেসের অনেক নেতাকেই দেখা যেত না। কিন্তু এখন রাজ্য় কংগ্রেস সভাপতির অবস্থান-সভায় হাজির থাকছেন অন্য় শীর্ষ নেতৃত্বও। সোমেন মিত্র স্পষ্ট জানিয়েছেন, পথে নেমে আন্দোলন করা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। রাজ্য় কংগ্রেস বৃহত্তর আন্দোলনের পথে পা বাড়াবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
নিজাম প্য়ালেসের পর মঙ্গলবার সল্ট লেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। ওই বিক্ষোভে হাজির ছিলেন সোমেন মিত্র, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান সহ অন্য়রা। এদিনও বক্তারা মোদী সরকার দ্বারা সিবিআই মামলার "রাজনীতিকরণের" তীব্র সমালোচনা করেন। প্রশ্ন তোলেন, কেন রাফালে নিয়ে তদন্ত করতে চাওয়া সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মাকে সরিয়ে দেওয়া হল।
দুদিন আগেই নিজাম প্য়ালেসে একই দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সভা করেছিল রাজ্য় কংগ্রেস। রাফালে বিমানের চুক্তি নিয়ে রাহুল গান্ধি দীর্ঘদিন ধরেই তোপ দাগছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। দেশ শুধু নয়, বিদেশ সফরে গিয়েও রাফালে ইস্য়ুতে মোদির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন রাহুল। প্রতিটি রাজ্য় শাখাকে এআইসিসি নির্দেশ দিয়েছে, সিবিআই এবং রাফালে ইস্য়ু নিয়ে পথে নামতে। সেই নির্দেশ মোতাবেক এরাজ্য়েও পরপর বিক্ষোভ সভা করছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের সভায় ভিড় কর্মীদের
সিবিআইকে নিয়ে কেন্দ্রে বিজেপি রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেন সোমেনবাবু। তিনি বলেন, "রাফালে চুক্তি নিয়ে তদন্ত করতে চেয়েছিলেন অলোক ভার্মা। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।" প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে জানিয়ে দেন সোমেনবাবু।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাফালেকে হাতিয়ার করতে বদ্ধপরিকর রাহুলের কংগ্রেস। তার ওপর ওই ইস্য়ুতে সিবিআই প্রধানকে সরিয়ে দেওয়ায় কংগ্রেসের বক্তব্য় আরও জোরালো হয়েছে। দেশজুড়ে কংগ্রেস আন্দোলন করছে। ১৯৮৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বোফর্স কামান মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল দেশ। রাজীব গান্ধির নেতৃত্বে পর্যদুস্ত হয়েছিল কংগ্রেস। সেই ইতিহাসকে স্মরণ করে এবার বিজেপির দিকে ঘুরিয়ে রাফালে তাক করতে চাইছেন রাজীবের পুত্র রাহুল। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।