ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রস বিধায়ককে ভবানীভবনে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই বিধায়ককে গোয়াতে যেতে বলা হয়েছিল। তারপর কলকাতায় আসতে বলা হয়েছিল। জেএমএম-কংগ্রেস জোট সরকার ফেলতে এই চক্রান্ত বলেই অভিযোগ কংগ্রেসের। ধৃত তিন বিধায়ককে রবিবার হাওড়া আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। ধৃতদের ১০ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে হাওড়া আদালত।
কংগ্রেসের অভিযোগ, গুয়াহাটিতে হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলেছিলেন ওই তিন বিধায়ক। অগ্রিম হিসেবে তাঁদের ৪৯ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই টাকাই তিন বিধায়কের থেকে উদ্ধার হয়েছে। অভিযোগ বার্মোর কংগ্রেস বিধায়কের। স্রেফ তিন বিধায়কই নয়। পালটা অভিযোগ অস্বীকার করে হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, কংগ্রেসের শীর্ষ থেকে শীর্ষস্তরের নেতারাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। এর সঙ্গে বিধায়ক কেনাবেচার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে, বিশ্বশর্মার এই সব বক্তব্য মানতে নারাজ কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই ঝাড়খণ্ডের আরোগোরা থানায় গোটা ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক জয়মঙ্গল সিং। সেই অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে পাঁচলা থানায়।
দলেরই তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ঝাড়খণ্ডের বারমোর কংগ্রেস বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গল সিং। পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় এসে এই তিন বিধায়ক টাকাবোঝাই গাড়ি-সহ ধরা পড়েছেন। কংগ্রেস ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত তিন বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছে। অভিযুক্ত তিন বিধায়কের মধ্যে রাজেশ কাচ্চাপ খিজরি, নমন বিক্সল কোঙ্গেরি কোলেবিড়া আর ইরফান আনসারি জামতাড়ার বিধায়ক। এই বিপুল পরিমাণ টাকার কোনও নথি দেখাতে পারেনি অভিযুক্তরা।
জয়মঙ্গল সিংয়ের অভিযোগ, 'তিন অভিযুক্ত অসাংবিধানিক, বেআইনি কার্যকলাপ চালিয়ে দলের সাংবিধানিক কাঠামো ভঙ্গ করেছেন। এঁরা কার্যত নিখুঁত অপরাধীর মত আচরণ করেছেন।' সেই কারণে তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য জয়মঙ্গল সিং দলীয় নেতৃত্বের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- মারাঠি আবেগ নিয়ে ছেলেখেলায় নারাজ, কোশিয়ারির পাশে থাকল না বিজেপিও
অভিযোগপত্রে জয়মঙ্গল সিং লিখেছেন, 'আমি বর্তমান জেএমএম-কংগ্রেস সরকারকে পতনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে। আমি জানাতে চাই যে এই সরকার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। বিধায়ক ইরফান আনসারি, রাজেশ কাচ্চাপ ও নমন বিক্সেল কোঙ্গেরি আমাকে কলকাতায় যাওয়ার জন্য ফোন করেছিলেন এবং ১০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইরফান আনসারি বলেছিলেন যে আমাকে নতুন সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হবে। ওই বিধায়করা আমাকে বলেছিলেন যে হিমন্ত শর্মা দিল্লিতে বসে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সহায়তায় এই খেলা চালাচ্ছেন।'
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সন্ধ্যায়। হাওড়ার পাঁচলা মোড় থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা-সহ গাড়ি উদ্ধার হয়। ওই গাড়িতে ছিলেন ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪৯ লক্ষ টাকা। ওই বিধায়করা অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছেন, বড়বাজার থেকে শাড়ি কেনার জন্য এই টাকা নিয়ে আসা হয়েছিল। আদিবাসী দিবস উপলক্ষে সেই শাড়ি ঝাড়খণ্ডের গ্রামীণ অঞ্চলে বিলি করার কথা ছিল। যদিও তাঁদের গাড়ি থেকে কোনও শাড়ি পাওয়া যায়নি। এরপরই তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ করে, ওই বিধায়করা বিজেপির থেকে অর্থ নিয়ে ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার চক্রান্তে যোগ দিয়েছিল। পরে, একই অভিযোগ শোনা গেল ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়ক জয়মঙ্গল সিংয়ের মুখেও।
Read full story in English