রাস্তার ধারে কারখানা। সেখানে বসে বছর ৫০-এর এক ব্যক্তি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, কর্মহানি, রাজনৈতিক নেতাদের দুষ্টচক্র নিয়ে জনসাধারণকে বোঝাচ্ছিলেন। পুরো নামটা বলতেও চাইলেন না। শুধু বললেন, 'আমাকে ভরত বলে ডাকতে পারেন।' তাঁর এক সহ নেতাও দেখা গেল, ওই নেতার মতই নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না। শুধু বললেন, 'আমি ভারতীয়, এটাই বড় পরিচয়।' ওই কারখানার কয়েক কিলোমিটার দূরেই হৃতেশের চায়ের দোকান। একদম বিরামগাম শহরের মাঝখানে। কেন স্থানীয় বাসিন্দারা কথা বলতে চাইছেন না, হৃতেশই সেই আসল কারণটা জানালেন। মানুষ কথা বলতে ভয় পাচ্ছে। আর, সেই জন্যই এড়িয়ে যাচ্ছেন।
হৃতেশ অবশ্য খোলামেলা। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে চা বিক্রি করেন। হাজারো পেশার মানুষ প্রতিদিন তাঁর দোকানে চা খেয়ে যান। তাঁরা নানারকম আলোচনাও করেন। সেই আলোচনায় হৃতেশ নিজেও অংশ নেন। সেইরকম আলোচনায় অংশ নেওয়ার ভঙ্গিতেও পরিষ্কার জানালেন, দ্রব্যমূল্য এত বেশি যে লোকে খুবই উদ্বিগ্ন। হৃতেশের পাশের দোকানদার নটবর সিং কীটনাশক বিক্রি করেন। নটবরের কথায়, 'এখানে কোনও বিরোধী নেই। একপেশে রাজনৈতিক ছবি। তাই এবারের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের খুব বেশি আশা করা উচিত নয়। যাঁরা কংগ্রেসকে তুলে ধরতে পারত, তাঁদেরকেই কংগ্রেস অবহেলা করেছে। নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মেরেছে। তাই কংগ্রেসের এখানে কোনও জেতার আশা নেই।'
তবে, আম আদমি পার্টি যেভাবে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে দাগ কাটছে, তাতে হৃতেশ এবং নটবরের মত অনেকেই খুশি। কারণ, তাঁরা মনে করছেন বিরোধী থাকা দরকার। আর, আম আদমি পার্টি দিল্লি এবং পঞ্জাবে মানুষের স্বার্থে কাজ করছে। ভোটে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ওই দুই রাজ্যে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে আপ কি গুজরাটে ভালো ফল করতে পারবে? সেই ব্যাপারে কিন্তু নিশ্চিত নন হৃতেশ এবং নটবর সিং। তাঁদের মতে, এটা হল 'পজিটিভ' চিত্র। একইসঙ্গে নটবর সিং বলেন, 'আমরা জানি না, আপ ঠিক কী করতে পারবে। কিন্তু, আমাদের আশা যে এবারের নির্বাচন হওয়ার পর একটা ভালো বিরোধী দল পেয়ে যাব।'
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েতে সাফল্য আসবে তৃণমূলের? আদালতে ঢোকার আগে সাফ উত্তর পার্থের
সেই তুলনায় অন্য চিত্র হতে পারে বিরামগাম বিধানসভা নির্বাচনে। গুজরাটে এতদিন পর্যন্ত প্রধান বিরোধী দল ছিল কংগ্রেসই। ২০১২ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৭ সালে সেই ভোটের পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ৪২ শতাংশ। এই দুই নির্বাচনেই কংগ্রেস বিরামগাম বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছিল। তার পর ভোটের পরিমাণ আরও বেড়েছে। সেটা হয়েছে ৪৪.৩২ শতাংশ। কিন্তু, গুজরাটের অনেক বিধানসভা কেন্দ্রের মত এবার সেই বিরামগাম বিধানসভা কেন্দ্রেও কংগ্রেস শিবিরে ভোট নিয়ে কোনও হেলদোল নেই।
Read full story in English