বসুন্ধরা সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে পাইলটের লেখা চিঠিতেও নীরব মুখ্যমন্ত্রী, গেহলটের বিরুদ্ধেই অনশনের ডাক দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট। চরাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র ৬ মাস বাকী! তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেন শচীন পাইলট। বেজায় অস্বস্তিতে কংগ্রেস। একদিকে কর্ণাটক নির্বাচন তারপরেই রাজস্থান নির্বাচন। শচীন পাইলটের এমন মন্তব্যের জন্য এটা সঠিক সময় নয় এমনটাই মনে করছেন দলের হাই কমাণ্ড। কী বলেছেন শচীন পাইলট?
তিনি বলেন, 'আগের বসুন্ধরা রাজে সরকারের আমলে যে দুর্নীতির প্রসঙ্গগুলি সামনে এসেছিল সেগুলির বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি'। রাজস্থানে অশোক গেহলট সরকারের বিরুদ্ধেই এবার ফের মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট। শুধু তাই নয় সরকারের বিরুদ্ধে অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট বরিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন যে দুর্নীতির বিষয়ে গেহলট ব্যবস্থা না নিলে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অনশনে বসবেন। জয়পুরের সিভিল লাইনসে নিজের বাসভবনে সরকারের বিরুদ্ধেই এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আনেন প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের বিরুদ্ধে খনি কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্ত করা যায়নি, বা ললিত মোদীর ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এর ফলে জসাধারণের কাছে একটি ভুল বার্তা গিয়েছে। নির্বাচনের আর মাত্র ৬ মাস বাকি। অবিলম্বে সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমি নিজে সরকারের বিরুদ্ধে অনশনে বসব’।
কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘বিরোধীরা এই বিষয়ে আমাদের সরকারের যোগসাজশের অভাবকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে। আমরা বসুন্ধরা রাজের বিরুদ্ধে ৪৫হাজার কোটি টাকার খনি কেলেঙ্কারির অভিযোগ সামনে এনেছিলান, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তদন্ত সংস্থাকে অপব্যবহার করছে, অন্যদিকে রাজস্থান সরকার তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে সঠিক কাজে ব্যবহার করছে না।
রাজস্থানে শচীন পাইলট ফের নিজের দলের সরকারকে নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। রবিবার এক সাংবাদিক তিনি বলেন, “প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের বিরুদ্ধে আমি মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম, কিন্তু গেহলট কোনও ব্যবস্থা নেননি।” এর প্রতিবাদে ১১ এপ্রিল জয়পুরের শহীদ স্মৃতিসৌধে একদিনের অনশনে বসব”।
তিনি বলেন, “বসুন্ধরা সরকারের দুর্নীতির বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তদন্তের। তারপরেও ব্যবস্থা নেওয়া হনি। এবিষয়ে আমি নিজে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। কিন্তু তার কোন উত্তর পাইনি। যাতে কংগ্রেস কর্মীরা মনে না করেন যে আমাদের কথা এবং কাজের মধ্যে ফারাক রয়েছে তার জন্য অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত’। পাইলট এদিন বলেন, ‘দেশের কেন্দ্রীয় সরকার ইডি এবং সিবিআই-এর মতো সংস্থাগুলিকে অপব্যবহার করছে এবং আমাদের কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার নাটক করা হচ্ছে। কিন্তু রাজস্থানে আমাদের সরকার সংস্থাগুলিকে সদব্যবহার করছে না”।
পাইলটের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (AICC) রাজস্থানের ইনচার্জ সুখজিন্দর সিং রন্ধাওয়া ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন যে পাইলটের প্রেস কনফারেন্সের জন্য এটা সঠিক সময় নয়। তবে তিনি বলেন, গেহলটের সঙ্গে দেখা করতে সোমবার বা মঙ্গলবার তিনি জয়পুরে যাবেন। তাকে পাইলটের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলবেন "কেন রাজের বিরুদ্ধে মামলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।"
তিনি আরও বলেন, "আমি রাজস্থানের এআইসিসি ইনচার্জ হওয়ার পর থেকে আমি পাইলটের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে ১০-১৫ বার দেখা হয়েছে। কিন্তু তিনি আমাকে একবারও বার দেখা করেছি কিন্তু তিনি একবারও এই সমস্যাটি আমাকে বলেননি,"। যেখানে আদানি ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রকে কোনঠাসা করতে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। সেখানে শচীন পাইলটের এমন বার্তা দলের অস্বস্তি বাড়াবে বলেই মনে করছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব।