রবিবার পুরুলিয়া জেলা আদালতে জামিন পেলেন ধৃত কংগ্রেস নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুক, ইউটিউবের মতো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে তিনি বারবার তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করেছেন। আর সেই কারণে তাঁকে সাইবার অপরাধে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, এমনটাই জানা গিয়েছিল। সেই মামলায় রবিবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয় কংগ্রেস নেতাকে। সেখানেই তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
আরও পড়ুন- জোড়া ফুলে কাঁটা ফোটাতে হাতের পাশে পদ্ম
জামিন পেয়েই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "অমানুষিক নির্যাতন চলেছে আমার উপর। থার্ড ডিগ্রি শুনেছি, সেটা কী এখানে এসে বুঝতে পারলাম। জল পর্যন্ত খেতে দেয়নি। খালি গায়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মেরেছে। পিসি ভাইপোর নামে আমি যদি ভুল কিছু লিখে থাকি তার জন্য মানহানির মামলা হতে পারে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে এই অত্যাচার কেন। আমি পুরুলিয়ার নেতাদের কাছে কৃতজ্ঞ। ওঁরা আমার পাশে না থাকলে আমি বাঁচতে পারতাম না। মনে হচ্ছিল প্রাণে মারা যাব। আর কোনও মানুষের ওপর যেন এই অত্যাচার না হয়। যে অত্যাচার পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে হচ্ছে তা হিটলার, মুসোলিনির সময়ও বোধহয় হত না।"
ঠিক কী ঘটেছিল?
সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে সোশ্যাল সাইটে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে রাজ্যের একাধিক থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় আগরপাড়ায় একটি বাড়ি থেকে সন্ময়কে গ্রেফতার করে পুরুলিয়া পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, কোনও পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করা হয়েছে সন্ময়কে। গ্রেফতারের সময় পুলিশের সঙ্গে শাসকদলের কর্মীরাও ছিল বলে দাবি পরিবারের। সেই সময়ে সন্ময় ও তাঁর পরিবারকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় খড়দা থানায় সন্ময়ের পরিবারের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। সন্ময়বাবুর দাদা তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। খড়দা থানায় সন্ময়ের উপর অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ’’। রবিবার তাঁকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছিলেন সন্ময়ের দাদা তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- অযোধ্যায় রাম মন্দির: মোদী-শাহর প্রতিশ্রুতি পূরণ
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য এবং কংগ্রেসের প্রাক্তন পৌরপিতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেভাবে রাতের অন্ধকারে পুলিশ-প্রশাসন তাঁদের সন্ত্রাস কায়েম করে তুলে নিয়ে গেলেন তাঁর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ এই রাজ্যে নতুন নয় এর আগেও প্রফেসর অম্বিকেশ মহাপাত্রের সঙ্গেও এই একই ঘটনা ঘটেছে। তবে সেই ঘটনার আবারও পুনরাবৃত্তি ঘটলো সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আমরা এই ঘৃণ্য অত্যাচারী-স্বৈরাচারী রাজ্য সরকার ও তাঁদের পুলিশ প্রশাসনের এহেন কালা কানুনের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনকে ক্রমশ সংগঠিত করব এবং পথে নেমে এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলব।"