উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে মুছে গেল কংগ্রেস। মিজোরামই ছিল উত্তর-পূর্বে কংগ্রেসের শেষ সম্ভাবনা। এ রাজ্যে ১০ বছর পর ক্ষমতায় ফিরল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। মোট ৪০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২৬টিতে জিতেছে জোরামথাঙ্গার নেতৃত্বাধীন এমএনএফ। ২০১৩ সালের ভোটে তারা পেয়েছিল মাত্র পাঁচটি আসন। এবারে তাদের ভোট শেয়ার ৩৭.৬ শতাংশ। সেখানে কংগ্রেসের ভোট শেয়ার ৩০.২ শতাংশ।
এদিনের ফলাফলের পর কংগ্রেস উত্তর-পূর্বের মোট ৮টি রাজ্যেই ক্ষমতা হারাল। ২০১৪ সাল থেকে এই অঞ্চলে একের পর এক রাজ্যেজিতে চলেছে বিজেপি। এখন আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা এবং মণিপুরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপির সহযোগী দল।
আরও পড়ুন, মরুরাজ্যে খরা কাটিয়ে লালফুলের জোড়া
কংগ্রেসের হাল বোঝার জন্য একটি তথ্য দিলেই যথেষ্ট হবে। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী লাল থানওয়ালা তাঁর নিজের এলাকা সারচিপ সহ দুটি বিধানসভাতেই হেরে গিয়েছেন। অন্য যে আসনে তিনি হেরেছেন সেটি হল চম্পাই দক্ষিণ। মিজোরাম বিধানসভায় তুইচাওং কেন্দ্রে জিতেছে তারা।
নর্থইস্ট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যে বিজেপি-র সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতায় যেতে অস্বীকার করেছিল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। জোরামথাঙ্গা ভোটে জেতার পর বিজেপি বা কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন।
গত মাসেই জোরামথাঙ্গা বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদী দেশের পক্ষে ভাল প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আইজলে বিজেপি-র কোনও স্থান নেই। সংবাদসংস্থা এএনআই জোরামথাঙ্গাকে উদ্ধৃত করেছে। ‘‘আমরা ৪০টার মধ্যে ২৬টা আসনে জিতেছি। ফলে আমরা বিজেপি কিংবা অন্য কোনও দলের সঙ্গে জোট করতে হবে না।’’
১৯৯৮ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত টানা দশ বছর ধরে মিজোরামে শাসন করেছে এমএনএফ। কংগ্রেসের এই পরাজয়ের অন্যতম কারণ তাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব বলেই মনে করা হচ্ছে। ভোটের ঠিক আগে আগেই পদত্যাগ করেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর লালজিরলিয়ানা, প্রাক্তন মন্ত্রী লালরিনলিয়ানা সাইলো এবং প্রাক্তন অধ্যক্ষ হিফেই।
এবারের মিজেরাম ভোটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল নিষেধাজ্ঞা এবং উন্নয়ন। কংগ্রেস সরকার রাজ্যে মদ্যপানের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে পারমিট ব্যবস্থা লাগু করেছিল। মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট তাদের প্রচারে বলেছিল তারা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল চার্চও। মিজোরামে জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশই খ্রিষ্টান।
Read the Full Story in English