উদ্ধব-পাটোলের মধ্যে 'গুরুত্বপূর্ণ' বৈঠক, 'ইন্ডিয়া' জোটের আসন্ন নানা কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয় এদিনের এই বৈঠকে। পাশাপাশি শারদ-অজিত পাওয়ারের বৈঠকের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
শরদ পাওয়ার এবং অজিত পাওয়ারের মধ্যে বৈঠক ঘিরে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে তুঙ্গে জল্পনা। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শরদ পাওয়ারের মন কি পদ্ম শিবিরের দিকে ঘুরেছে? এর মাঝেই মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রধান নানা পাটোলে রবিবার শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা করেন। দুজনের মধ্যে ইণ্ডিয়া জোটের নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর মুম্বইতে বিরোধী দল 'ইন্ডিয়া'-এর যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সেই বিষয়েও আলোচনা হয়। বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছিলেন যে শনিবার পুনেতে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) এর প্রতিষ্ঠাতা শরদ পাওয়ার এবং মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের মধ্যে বৈঠক ঘিরে এমভিএ নিয়ে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে সেই বিষয়টি নিয়েই এদিনের বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, 'মহারাষ্ট্রের মানুষ আমাদের একজোট হিসেবেই দেখে এবং কর্মীদের মধ্যে এই নিয়ে কোন বিভ্রান্তি থাকা উচিত নয়। এমভিএ আজ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সকলেরই তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত। কংগ্রেস, শিবসেনা (ইউবিটি) এবং এনসিপি এমভিএ-র অংশ’।
এনসিপি সভাপতি এবং মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রীর এক বৈঠক ঘিরেই জল্পনার সূত্রপাত। এক আঞ্চলিক নিউজ চ্যানেলের ফুটেযে দেখা যায় শারদ পাওয়ার দুপুর ১টা নাগাদ কোরেগাঁও পার্ক এলাকায় এক ব্যবসায়ীর বাসভবনে পৌঁছান। বিকেল ৫টা নাগাদ তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যান। প্রায় দুই ঘন্টা পরে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারকে সন্ধ্যা ৬.৪৫ মিনিটে অন্য একটি গাড়িতে চেপে একই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। তা নিয়েই তোলপাড় পড়ে যায় মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে।
অজিত পাওয়ার সহ আট বিধায়ক ২রা জুলাই একনাথ শিন্ডে সরকারে যোগদান করেন। যার পরে এনসিপিতে বিভাজনের সৃষ্টি হয়। অজিত পাওয়ারের সঙ্গে 'গোপন' বৈঠক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, শরদ পাওয়ার বলেছিলেন, "অজিত আমার ভাইপো। তার সঙ্গে দেখা করাতে সমস্যা কোথায়? পরিবারের প্রবীণ ব্যক্তি যদি পরিবারের অন্য সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন তাহলে এনিয়ে কোথায় কোন সমস্যা থাকার কথা নয়”।
কংগ্রেস এখন আসন্ন নির্বাচনের জন্য একটি ‘প্ল্যান বি’ নিয়ে চিন্তা করছে, যদি পাওয়ার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে পদ্মশিবিরে যোগ দেন তাহলে কোন পথে হবে লড়াই সেই নিয়েই এখন ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। এবিষয়ে পাটোলে বলেন, "আমরা দলের নেতা রাহুল গান্ধী কে রাজ্যের সাম্প্রতিক আপডেট দিচ্ছি”।
যদিও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার জোর দিয়ে আসছেন যে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে তার অবস্থান পরিবর্তন করবেন না। যদিও অজিত পাওয়ারের সঙ্গে শরদ পাওয়ারের গোপন বৈঠক তার এমভিএ সহযোগী, কংগ্রেস এবং শিবসেনার ‘বিশ্বাস’কে নাড়িয়ে দিয়েছে।
এমভিএ মিত্রদের অসন্তোষ সোমবার সামনে আসে যখন শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত রাখঢাক না করেই শরদ পাওয়ারের উপর সরাসরি আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোটের বিরোধী দলগুলির মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা উচিত নয়’। প্রত্যক দলকেই তাদের নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে “ইস্যুটি আসন্ন I.N.D.I.A.এর বৈঠকে আলোচনা করা হবে।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, দল ২৪-এর নির্বাচনে ‘প্ল্যান বি’ প্রস্তুত করতে রাখতে চাইছে। "তারা বিভিন্ন কারণে পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর উপর বিশ্বাস হারিয়েছে," বলেছেন কংগ্রেসের একজন সিনিয়র নেতা। তিনি বলেন, এমন পদক্ষেপ দলকে বিভাজনের হাত থেকেও রক্ষা করবে।"