প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের দারিদ্র দূরীকরণ নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, দারিদ্রের বিরুদ্ধে বিজেপির যুদ্ধের ভিত হলো নিঃস্বার্থ সেবা, যা কী না বহু মানুষের জীবনে আমূল পরিবর্তন এনেছে। অপরদিকে কংগ্রেস দারিদ্রকে ব্যবহার করে "একটি বিশেষ পরিবারের" প্রচার এবং বিকাশ সাধন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মহারাষ্ট্রের শিরডিতে এক বিশাল জনসমাবেশের সামনে মোদীর এই জাতীয় উক্তি স্পষ্টতই নির্দেশ করে দিল যে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে দারিদ্র দূরীকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে।
তাঁর ভাষণে গান্ধী পরিবারের নাম না করলেও মোদীর ইশারা যথেষ্টই স্পষ্ট। "কংগ্রেস দারিদ্রকে ব্যবহার করে একটি বিশেষ পরিবারের প্রচার এবং বিকাশ সাধন করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য যেখানে মুখ্য নয়, এবং জনকল্যাণমূলক কাজের ভিত্তি হচ্ছে আন্তরিকভাবে দরিদ্রের উন্নতিসাধনের চেষ্টা, সেখানে ফল শুধু ভালো হয় তাই নয়, কাজের অনুপ্রেরণাও যোগায়, যাতে পরবর্তী প্রকল্পগুলি আরও দ্রুত রূপান্তরিত করা যায়।
শিরডিতে সাইবাবা সমাধির শতবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে যান প্রধানমন্ত্রী। শিরডির মন্দিরে পুজো দেন তিনি। এই উপলক্ষ্যে মোদী মহারাষ্ট্র সরকারের মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন, যার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অন্তর্গত ২.৫০ লক্ষ বাড়ি বানাবে সে রাজ্য। এরপর তিনি নাগপুর, শোলাপুর, বীড়, লাতুর, অমরাবতী, থাণে, এবং নন্দুরবার জেলায় এই প্রকল্পের দ্বারা লাভবান হয়েছেন এমন অনেকের সঙ্গে একটি ই-গৃহপ্রবেশ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন। এই কথোপকথনের মাধ্যমে তিনি গৃহদান, আয়ুষ্মান ভারত এবং স্বচ্ছ ভারতের মত প্রকল্পের গুরুত্বের ওপর জোর দেন, এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন মানুষের মতামত জানতে চান।
মোদীর দাবী, "চার বছরে কংগ্রেস গরীবদের জন্য স্রেফ ২৫ লক্ষ বাড়ি বানিয়েছিল, যেখানে বিজেপি সরকার সেই চার বছরের মধ্যেই ১.২৫ কোটি বাড়ি বানিয়েছে। কংগ্রেসের গতিতে চললে ১.২৫ কোটি বাড়ি বানাতে ২০ বছর লাগত। বিজেপি সেই লক্ষ্যের উদ্দেশ্যে অর্ধেক পথ পেরিয়ে এসেছে। ২০২২ সালের মধ্যে সবার জন্য আবাসন অত্যন্ত বাস্তব ভাবনা।"
"বিজেপি সরকারের সেবার মনোভাব এবং আন্তরিক চেষ্টাই দুই দলের মধ্যে তফাৎ করে দিয়েছে। আমরাও তো একই সম্পদ এবং লোকবল ব্যবহার করেছি। কিন্তু আমাদের প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে এই কারণেই যে আমাদের মধ্যে পরিবর্তন এনে গরীবের সাহায্য করার রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছিল," বলেন মোদী।
আয়ুষ্মান ভারতের মত উচ্চাভিলাষী প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিককে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর। এই প্রকল্পের যথাসম্ভব সুবিধে নিতে তিনি দেশবাসীকে আহ্বান জানান এবং বলেন, "প্রতি বছর ৫০ কোটি মানুষকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খাতে সাহায্য দেওয়া হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো এটা সুনিশ্চিত করা যে দেশে কেউ যেন চিকিৎসার অভাব বোধ না করেন। এই প্রকল্পের অধীনে চিকিৎসার পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ হবে, যার ফলে দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান হবে।"