২০২৪-কে বিবেচনা করে মোদী বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজ চলছে। এই প্রেক্ষাপটেই ভবানীপুরের উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যেয়র বিরুদ্ধে কংগ্রেস কী আদৌ প্রার্থী দেবে? তা নিয়ে জল্পনা ছিল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য সেই জল্পনাকে আরও উস্কে দেয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ভবানীপুরে উপনির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে দলীয় বৈঠকের পর জানিয়ে দিলেন অধীর চৌধুরী। বামেদের সঙ্গে জোট গড়েই উপনির্বাচন লড়তে প্রস্তুত কংগ্রেস।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এ দিন বলেছেন, "ভবানীপুরে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে। বামেদের সঙ্গে জোট করেই আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত। এআইসিসি-কে প্রার্থী দেওয়ার কথা আমরা জানাব। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হাইকম্যান্ডই নেবে।"
বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসনটি সংযুক্ত মোর্চার তরফে কংগ্রেসকেই ছাড়া হয়েছিল৷ তাই উপনির্বাচনেও প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে কংগ্রেসকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু, বেশ কিছুদিন আগে ভবানীপুরে প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়েই সওয়াল করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। যা নিয়ে বাম-কংগ্রেস শিবিরের টানাপোড়েন শুরু হয়। বামেরা মমতার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু, কংগ্রেস প্রার্থী না দিলে কী হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এমনকী কংগ্রেস ভবানীপুরে প্রার্থী না দিলে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতিও কার্যত সেরে রেখেছে সিপিআইএম৷ বাম শরিকদের মধ্যে আবার ফরওয়ার্ডব্লক ওই কেন্দ্রে প্রার্থী দিতেও আগ্রহী ছিল।
কিন্তু, সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অধীর চৌধুরী প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করতেই আপাতত জল্পনার অবসান হল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আগামী লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে বিরোধী জোট গঠনের তৎপরা শুরু হয়েছে। এতে সূত্রধরের কাজ করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ইতিমধ্যেই ব্যক্তিগত ইগো বা রাজনৈতিক ক্ষুদ্র স্বার্থ ভুলে বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিজেপি বিরোধী জোটে সামিল হওয়ার অব্হান জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই মমতা দেখা করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী সহ প্রায় সব বিরোধী দলের নেতা, নেত্রীদের সঙ্গেই। এই প্রেক্ষাপটে ভবানীপুরের উপনির্বাচনে তৃণমূলে নেত্রীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী দিলে কী ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিরোধী ঐক্য ধাক্কা খেতে পারে?
এই প্রশ্নের জবাব কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন অধীর চৌধুরী। তাঁর কথায়, "রাজনৈতিক লড়াইয়ে তো কোনও বাধা নেই। প্রদেশ কমিটি স্থির করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া হবে। প্রস্তাব দিল্লিতে পাঠাব। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই হবে। যা সিদ্ধান্ত হবে আমরা তা মেনে নেব।"
২০২১ ভবানীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হন যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান। কিন্তু দাপট দেখাতে পারেনি সংযুক্ত মোর্চা। তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মূলত লড়াই ছিল বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষের। এবারও কী শাদাব খানইকে প্রার্থী হিসাবে চাইছে প্রদেশ নেতারা? এখনও তা জানা যায়নি।
এদিকে শনিবার ভোট ঘোষণার পর পরই জঙ্গিপুর ও সামসেরগঞ্জ কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে কংগ্রেস। এবারও জঙ্গিপুরে লড়াই করবেন জাকির হোসেন। তবে, সামসেরগঞ্জে আমিরুল ইসলামের নাম বলা হলেও তা প্রত্যাহার করেন কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান। এই ঘটনাকে প্রদেশ সভাপতি 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে মন্তব্য করেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন