জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদের লড়াইয়ে জেতার ব্যপারে আশাবাদী ‘প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী’ শশী থারুর। শনিবার তিনি দাবি করেন, দলের সম্পদ তরুণ নেতা-কর্মীরা তার সঙ্গে আছেন। একই সঙ্গে তিনি আরও দাবি করেন দলের নিচু তলার কর্মী সমর্থকের বিপুল সমর্থন পেয়ে তিনি অভিভূত। একই সঙ্গে তিনি বলেন, দলের সিনিয়ার নেতারা সভাপতি পদের এই নির্বচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী মল্লিকার্জুন খাড়গে’কেই সমর্থন করছেন।
শনিবার এক ভাষণে তিনি বলেন, “আমি তরুণ ভোটারদের সমর্থন পাচ্ছি। আমি নিচু স্তর থেকে ভাল প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। দলের সিনিয়ররা নেতারা খাড়গে’কেই সমর্থন করছেন। আমরা পরিবর্তনের পক্ষে কথা বলেছি,"। দলের অনেক নেতাকর্মী তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর হয়ে প্রকাশ্যেই প্রচার চালাচ্ছেন বলে স্বীকার করে তিনি উল্লেখ করেন, “গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে এবং একজন সিনিয়র নেতা ও নিম্ন পদের সদস্যের ভোটের ওজন একই”। তিরুঅনন্তপুরম সাংসদ বলেছেন, "গান্ধী পরিবার থেকে নিজেকে দূরে রেখে যে কোন কংগ্রেস সভাপতির পক্ষে কাজ করা বোকামি।" পাশাপাশি তিনি বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে দলে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং নেতৃত্বে তরুণ মুখ সামনে আনাই তাঁর লক্ষ্য।
থারুর আরও অভিযোগ করেন “এর আগে অনেক নীচু তলার কর্মী দল ছেড়েছেন । আমি নির্বাচিত হলে দলে কেউই উপেক্ষিত থাকবেন না”। তিরুবনন্তপুরম সাংসদ প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের বিরুদ্ধে আগামী ১৭ ই অক্টোবর দলের সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি৷ নির্বাচনের ফল আগামী ১৯শে অক্টোবর ঘোষণা করা হবে৷
অন্যদিকে ‘কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট’ পদে লড়াইয়ের ময়দানে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি এর আগে এক ভাষণে বলেন, তিনি নির্বাচনে জয়ী হলে, তিনি দলের ৫০ শতাংশ পদে ৫০ বছরের কম বয়সীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। খাড়গে ছাড়াও তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুরও কংগ্রেসের প্রসিডেন্ট পদের নির্বাচনে পদপ্রার্থী। দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে সভাপতির কুর্সি কার মাথায় উঠবে সেদিকেই নজর এখন সকলের।
আরও পড়ুন: < ‘কালাজাদু বলি’ মামলায় সক্রিয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, একমাসের মধ্যে জবাবদিহির নির্দেশ >
খাড়গে তার ভাষণে বলেন, "যদি আমি সুযোগ পাই, আমি উদয়পুর ঘোষণায় যা প্রস্তাব করা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করব"। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, "আমরা দলে একে অপরের সঙ্গে লড়াই করতে আসিনি। আমাদের লড়াই মোদী-শাহের বিরুদ্ধে"। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বলেন, "দলে ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে শুধুমাত্র ৫০ বছরের কম বয়সী, মহিলা, এসসি, এসটি এবং ওবিসি-দের জন্য”। পাশাপাশি বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মত একাধিক ইস্যুতে তিনি বিজেপির তীব্র সমালোচনাও করেন।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বলেন, "আমরা বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি পেট্রোল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নেমেছি। আমাদের লড়াই দুধ, গম, ঘি-এর উপর জিএসটি- চাপানোর বিরুদ্ধে। আমাদের লড়াই মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার পতনের বিরুদ্ধে। আমরা দলের মধ্যে একে অপরের সঙ্গে লড়াই করতে আসিনি। আমাদের লড়াই মোদী-শাহের বিরুদ্ধে”।
রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা খাড়গে আরও বলেন, "আমরা চেয়েছিলাম রাহুল গান্ধী আবার কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। আমি কখনই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ভাবিনি। সিনিয়র নেতারা এবং দলের অন্যান্য সদস্যরা আমাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলেছিলেন, এবং সেই কারণেই আমার এই সিদ্ধান্ত। এই নির্বাচন দলের মধ্যেই। এটি আমাদের দলকে শক্তিশালী করতে এবং ২০২৪ এ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে”।