Advertisment

পোস্টার তরজা, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘাস-ফুলের অন্দরের প্রবল কাজিয়া?

ওয়ার্ডে জোড়া-ফুলের অন্যান্য নেতৃত্বও এর হদিশ খুঁজে পাচ্ছেন না। স্মৃতিতে ফিরছে কাটমানি দুর্নীতি। প্রচারে বিঁধছে বিরোধী প্রার্থীরা।

author-image
Rajit Das
New Update
Controversial poster in 49 wards of Kolkata raising questions among tmc

পুরযুদ্ধের আগেই শিয়ালদহ অঞ্চলে পোস্টার বিতর্ক।

দুয়ারে কলকাতার ভোট। জোরকদমে চলছে প্রচার। কিন্তু এর মধ্যেই শিয়ালদহ অঞ্চলে পোস্টার বিতর্কে তুঙ্গে তরজা। পোস্টারে লেখা, কেই বা কারা যদি তৃণমূলের নাম করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভোটের খরচ বাবদ অর্থ দাবি করে তবে তা প্রত্যাখ্যান করতে হবে, না হলে পুলিশে অভিযোগ জানাতে হবে। পোস্টারটি ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ব্লক তৃণমূলের তরফে কাজল দাশগুপ্তের নামে বিলি হয়েছে। কিন্তু, কাজলবাবুর দাবি তিনি এই পোস্টার লিখতে বা বিলি করতে বলেননি। ওয়ার্ডে জোড়া-ফুলের অন্যান্য নেতৃত্বও এর হদিশ খুঁজে পাচ্ছেন না। ফলে এই বার্তা পোস্টার ঘিরে তৃণমূলের অন্দরেই তরজা তুঙ্গে। স্মৃতিতে ফিরছে কাটমানি দুর্নীতি।

Advertisment

কী লেখা রয়েছে পোস্টারে?

ইতিমধ্যেই ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটারদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে এই পোস্টার। শিয়ালদহ, সুরেন্দ্রনাথ কলেজ সংলগ্ন এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ির দেওয়ালেও এই পোস্টার দেখা গিয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, 'এই অঞ্চলের সমস্ত দোকানদার, ব্যবসায়ীদের জানানো হইতেছে, যে কেউ বা কারা যদি দলের না করিয়া অথবা ভোটের খরচ দরুন টাকা পয়সা বা আর্থিক অনুদান চাইতে আসে, তাহলে আপনারা প্রত্যাখ্যান করিবেন। যদি কোনওরকম হুমকি বা জোরজুলুম করে তাহলে নিকটবর্তী থানায় অভিযোগ দায়ের করিবেন অথবা দলীয় নেতৃত্বকে শীর্ঘ্রই অবগত করিবেন।' পোস্টারটিতে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের তরফে কাজল দাশগুপ্তের নাম ও মোবাইল নম্বর রয়েছে।

কেন এমন পোস্টার?

এই পোস্টার তিনি লিখতে বা বিলি করতে বলেননি বলে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা কাজল দাশগুপ্ত। তাহলে তাঁর নাম পোস্টারে উঠে এল কেন? কাজলবাবুর সাফ দাবি, পোস্টারের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত তিনি। তিনি বলেন, 'দিন কয়েক আগে আমাকে বেশ কয়েকজন এসে জানিয়েছিল এই ধরণের অভিযোগ। আমি তখন তাঁদের থানায় যেতে বলি। এরপরই এই পোস্টার ওয়ার্ডে পড়েছে বলে শুনেছি। আমার কথা শুনে ওরাই হয়তো মানুষকে সাবধান করতে এই পোস্টার দিয়েছে। আবার বিরোধী দলেরও কাজ হতে পারে।'

তাহলে কী এই ওয়ার্ডে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ছাই চাপা আগুন অবস্থায় রয়েছে? ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে গত তিনবারের তৃণমূলের জয়ী কাউন্সিলর অপরাজিতা দাশগুপ্ত। তিনি প্রয়াত। মহিলা সংরক্ষিত এই ওয়ার্ডে এবার ঘাস-ফুলের কোনও নেতা, কর্মীকে প্রার্থী করেনি দল। তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন কংগ্রেস থেকে সদ্য শাসক শিবিরে নাম লেখানো তরুণ মুখ মোনালিসা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জেরেই কী

মধ্য কলকাতার সবুজ ঘাঁটিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া? মানতে নারাজ কাজল দাশগুপ্ত। তিনি বলেছেন, 'আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল তৃণমূল। দল যাঁকে প্রার্থী করবে আমরা সকলে তাঁকে সমর্থন করে জেতাবো। আর ওই পোস্টারের বক্তব্য তো সতর্ক করে দেওয়ার। এতে অভ্যন্তরীণ বিবাদের ইঙ্গিত খোঁজার চেষ্টা বৃথা।'

তৃণমূল প্রার্থী মোনালিসা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যও প্রায় এক। বলেন, 'পাস্টারে লেখাটি সমর্থনযোগ্য। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি। আর এই পোস্টার যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কেউ দেয়নি তারই বা প্রমাণ কোথায়?' তবে, ৪৯ ওয়ার্ডের তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর নেতৃত্ব এতে সিদুঁরে মেঘ দেখছে। পুর বিষয়টি উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি তাপস রায়কে জানানো হয়েছে।

পোস্টারে কাটমানিকাণ্ডের ছায়া লক্ষ্য করছে সিপিএম, বিজেপি। ওই ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী উপনীতা পাণ্ডে সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, 'ওয়ার্ডে তোলাবাজি চলছে। ভোটের সময় বেড়েছে। এটা তৃণমূলের পোস্টার প্রমাণ করল। আর প্রকাশ্যে এলো ওদের গোষ্ঠী বিবাদ। মানুষ এখন ঠিক করবেন তৃণমূলকে ভোট দেবেন কিনা।' বিজেপি-র তরফেও কার্যত একই দাবি করা হয়েছে।

লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে বাম-বিজেপি প্রার্থী। কিন্তু দলের অন্দরে অবিশ্বাসের বাতাবরণই এবার পুরযুদ্ধে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

আরও পড়ুন: বিজেপি-র অন্দরেই প্রশ্ন, ভোটের আগেই লড়াই থেকে সরলেন ২ প্রার্থী

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

abhishek banerjee KMC Poll KMC Elections KMC tmc Mamata Banerjee
Advertisment