উপনির্বাচন ঘোষণার আগের দিন এ রাজ্যে গেরুয়া শিবির থেকে বলা হয়েছিল রাজ্যের করোনাগ্রাফ বাড়ছে। টিকাকরণে সবচেয়ে পিছিয়ে এই রাজ্য। উপনির্বাচন হলে যে ফল ভাল হবে না সেকথাই বলেছিলেন দলের রাজ্য সাধারাণ সম্পাদক রথীন্দ্র বোস। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভবানীপুরের উপনির্বাচন সহ রাজ্যের দুই কেন্দ্রের নির্বাচন ঘোষণা করে দেয় কমিশন। নির্বাচন ঘোষণা হতেই যেন ছ্যাঁকা লেগে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। কমিশনের বিরুদ্ধে রে রে করে উঠেছে নেতৃত্বের একাংশ। নির্বাচন না হলে রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট হবে, কমিশনকে রাজ্যের মুখ্যসচিবের এই চিঠি নিয়েও আরেক বিতর্ক বেঁধেছে। এককথায় ভবানীপুরের উপনির্বাচন ঘোষণায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে।
বিজেপির দাবি ছিল, আগে পুরভোট, তারপর উপনির্বাচন। তৃণমূল ঠিক বিপরীত দাবি জানিয়ে আসছিল। আগে উপনির্বাচন, তারপর পুরভোট। এতদিন সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরসহ নানা কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে কেন্দ্রীয় নির্বাচন সংস্থাও তৃণমূলের তোপের মুখে পড়েছে। এবার উলোটপুরান। ভবানীপুরের উপনির্বাচন ঘোষণার পর থেকে গেরুয়া শিবির থেকে নিশানা করা হয়েছে কমিশনকে। কেউ কেউ বলছেন নির্বাচন কমিশন যে বিজেপির হয়ে কাজ করে না তা প্রমানিত হল। রাজনৈতিক মহলের একাংশ তো 'বৃহত্তর বন্ধুত্ব তত্ব' সামনে নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন- উপনির্বাচন শুধু ভবানীপুরেই, চরম অনিশ্চয়তায় তৃণমূলের প্রথম বিধায়ক
আরও পড়ুন- ‘কমিশন প্রভাবিত হয়েছে-তদন্ত হোক’, ভবানীপুরের উপনির্বাচন ঘোষণায় ফুঁসছেন দিলীপ
নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচন ঘোষণা করে রাজ্য সরকারের তরফে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হওয়া থেকে ভবানীপুরের ভোটে মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশের কথা লিখে মুখ্যসচিবের আবেদনের কথা প্রকাশ্যে এনেছে। এখানেই গোল বেঁধেছে। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া মুখ্যসচিবের চিঠিকে সামনে রেখে ইস্যু করার হুঙ্কার ছেড়েছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'প্রমাণিত হল যে বিজেপির কথায় কমিশন চলে না। আর মুখ্যসচিব তৃণমূলের নির্দেশে রাজ্যের সাংবিধানিক সংকটের কথা চিঠি দিয়ে কমিশনকে জানিয়েছেন। প্রশাসনিকস্তর থেকে এটা কী করা যায়? আমরা এটাকে ইস্যু করব।' ভবানীপুরের সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'শুধু ভবানীপুর কেন, রাজ্যের বাকি চার কেন্দ্রেও উপনির্বাচন করা যেত।'
মোদ্দা কথা এক উপনির্বাচন ঘোষণায় নানা দিক উন্মোচিত হয়ে গেল। এখানকার বিজেপি নেতারা উত্তরাখন্ডের মুখ্য়মন্ত্রীর পদত্যাগ করার উদাহরণ টেনে চলেছিলেন বেশ কিছু দিন যাবত। তাঁদের বক্তব্য ছিল, করোনা আবহে ভোট না হওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন। এখানে যা করোনা পরিস্থিতি তাতে ভোট সম্ভব নয়। এখানেও ভোট না হলে কী হতে পারে সেই ভাবনায় মশগুল ছিলেন অনেকেই। শেষমেশ এসবে জল ঢেলে দিল নির্বাচন কমিশন। তবে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কমিশনে দৌত্য চালিয়ে গিয়েছেন, মুখ্যসচিবও চিঠি দিয়েছেন কমিশনকে। হাজারো প্রশ্নও উঠে এসেছে এই উপনির্বাচন ঘোষণায়।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন