এবার আলু চাষটাই পিছিয়ে গেল কোচবিহারের ঝিনাইডাঙ্গার কুন্ডু পরিবারের। তাতে কোনও আফসোস নেই। নেই আক্ষেপ। দলের প্রতি আনুগত্যই শেষ কথা। তাঁদের জমি থেকেই রথযাত্রার সূচনা করবেন অমিত শাহ। সভা হবে বিজেপির। শুধু দলের মর্যাদা রাখতেই নিজেদের চাষের জমিতে সভা করার অনুমতি দিয়েছেন চিনু কুন্ডু। তৃণমূল কংগ্রেস বা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও বাধা বা আপত্তি আসেনি বলেও জানিয়েছেন ওই পরিবারের সদস্যরা।
গোড়া থেকেই কোচবিহার শহরের কোনও জায়গায় সভা ও রথযাত্রা করার অনুমতি পায়নি বিজেপি। হাজার চেষ্টা করেও কোনও ভাবেই এই শহরে অমিত শাহর সভা বা রথযাত্রার আয়োজন করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। কিন্তু পদ্মশিবিরের মুশকিল আসান করেন বিজেপির কর্মী চিনু কুন্ডু। কোচবিহার শহর থেকে মাত্র ছ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইডাঙ্গায় তাঁর সাত বিঘে চাষের জমিতে সভা হওয়ার কথা হয়েছিল অমিত শাহর। বৃহস্পতিবার দিনভর চলে সভামঞ্চ বাঁধা সহ প্রস্তুতি পর্ব। সভাস্থল পরিদর্শনে যান দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: দিলীপ বলেন হ্যাঁ, কৈলাস বলেন না, ত্রিশঙ্কু অমিত শাহের সভা
সাত বিঘে চাষ জমির পাশেই বাড়ি চিনু দেবীর। গত ২০০৩-০৮ সাল ডাউয়াগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর স্বামী অঞ্জন কুন্ডুও বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। ছেলে মানসও এই জমি দেওয়া নিয়ে কোনও আপত্তি জানাননি।চিনু দেবী বলেন, "এখানে বিজেপি সভা করবে, অমিত শাহ আসবেন এটা খুবই গর্বের বিষয়। দলের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই জমি সভা করার জন্য দেওয়া হয়েছে।" এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে "ঠিকমত ভোট" হলে জয়ী হতেন বলেও দাবি করেন চিনুদেবী। অঞ্জনবাবু বলেন, "এবার আলু চাষ অনেকটাই পিছিয়ে যাবে এই সভা করার ফলে। তবুও কোনও আক্ষেপ আমাদের নেই। দলের জন্য এটুকু ত্যাগ স্বীকার করতেই হয়।"
এদিনই দেখা গেল, সভাস্থলের পাশে বাড়ি হওয়ায় বিজেপির নেতা-নেত্রীরা যখন তখন দলীয় কার্যালয় মনে করে ঢুকে পড়ছেন কুন্ডু বাড়িতে। ঘরে বসে মিটিং করছেন। একদিকে জমিও দিয়েছেন, পাশাপাশি সভার আয়োজনের সময় ছোটখাটো মিটিং-আলোচনাও চলছে এই বাড়িতে। তবে আদালতের গেরোয় গেরুয়া শিবিরের রথযাত্রা বা সভা হয় কী না, তাই এখন দেখার। যদি নাও হয়, হাসিমুখেই মেনে নেবেন কুণ্ডু পরিবার।