এবার পত্রযুদ্ধে শামিল মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল।
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বাংলায় যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে।রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে বিশদে জানতে চেয়ে সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পুলিশের ডিরেক্টরকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু, সেই ডাকে সাড়া দেয়নি রাজ্য প্রশাসনের দুই পদাধিকারী। ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল এরপরই মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে তলব করে নবান্নে চিঠি পাঠান। তারই জবাবে পালটা চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, রাজভবনে যাবেন কিনা তা স্পষ্ট না করে মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে রাজ্যপাল ধনকড়কে লেখেন 'সহযোগিতা করন, উস্কানি দেবেন না।'
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পালটা টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি জানিয়ে দেন তাঁকে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর দাবির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আত্মসমীক্ষার পরামর্শ দেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
আরও পড়ুন: মমতাকে চিঠি রাজ্যপালের, ‘আগামিকাল আসুন, একসঙ্গে আলোচনা করব’
রাজ্যপালকে পাঠানো চিঠিতে কী লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী?
সোমবার সন্ধ্যায় নিজের লেটার হেডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে চিঠি লিখে জানান, 'রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের সিনিয়র অফিসারদের সমালোচনা করে আপনি ঘন ঘন যে সাংবাদিক বৈঠক করছেন ও টুইট করছেন, তা দেখে আমি খুবই মর্মাহত। আপনি নিশ্চয়ই বুঝবেন যে গোটা দেশে যে পরিস্থিতি চলছে তার নিরিখে রাজ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাটাই এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য।' এরপরই কিছুটা ঠেঁস দিয়ে তিনি লিখেছেন, 'আমি মনে করি শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে রাজ্য সরকারের পাশে থাকাটাই রাজ্যপালের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা, বিশেষ করে যারা শৃঙ্খলার পরিবেশকে নষ্ট করতে চাইছে তাদের উস্কানি না দেওয়াটাই কর্তব্য। দয়া করে শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করুন।'
তৃণমূল প্রায়ই অভিযোগ করে বলে, রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কথা বলছেন। ধনকড়কে দেওয়া চিঠির নির্যাসেও কৌশলে সেই ইঙ্গিতই মমতা করতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠির উত্তর পাল্টা চিঠিতেই দেন ধনকড়। পরে তিনি 'ব্যাথিত ও ক্ষুব্ধ' বলে টুইটে জানান। সাংবিধানিক এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে তিনি সব পদক্ষেপ করছেন বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। শেষে অবশ্য তিনি লেখেন, 'জনস্বার্থে দু'জনে মিলে সমন্বয় করে চলে চলতি হিংসার পরিস্থিতি থেকে মানুষকে রেহাই দিয়ে শান্তি কায়েম করা উচিত বলেই মনে করছি।' এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, 'মঙ্গলবারের বৈঠকের বিষয়ে আপনার (মুখ্যমন্ত্রীর) থেকে ইতিবাচক জবাব আশা করছি।'
পত্রযুদ্ধ রাজভবন-নবান্ন সংঘাতে অন্য মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Read the full story in English