লকডাউনে কলকাতার রাস্তায় বামফ্রণ্টের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমারকাণ্ড ঘটল। ২৫ দিন নীরব থাকার পর নিঃশব্দ আন্দোলনে ঘুম ভাঙল মহানগরের। শনিবার রেড রোডে আম্বেদকর মূর্তির সামনে সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি, ঠেলাঠেলি হয়। করোনা পরীক্ষা বৃদ্ধি, কালোবাজারী বন্ধ, সঠিক তথ্য তুলে ধরা-সহ একাধিক দাবিতে চলে প্রতীকী প্রতিবাদ। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীদের নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়।
লকডাউনের ২৫ দিনের মাথায় বামাদের আন্দোলনকে ঘিরে তুলকালাম হল রেড রোড। করোনা আবহে লকডাউন চলাকালীন কলকাতায় এটাই প্রথম রাজনৈতিক বিক্ষোভ। অভিযোগ, বামেরা নিয়মনীতি মেনে সোশাল ডিসট্যান্স মেনেই আন্দোলন করছিলেন। পুলিশই নাকি টানাহ্যাঁচরা করে সেই নিয়ম ভাঙে। মহম্মদ সেলিম বলেন, "প্রথমে এই প্রতিবাদ করার কথা ছিল মৌলালিতে। পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশই আমাদের বলে, রেড রোডে কর্মসূচি করতে। এদিনের কর্মসূচিতে আমরা কোনও আওয়াজ করিনি। রেড রোডে যখন আমরা সামাজিক দূরত্ব মেনে কর্মসূচি করছি, তখন হঠাৎ বিশাল পুলিশ বাহিনী গাড়ি থেকে নামে। কোনও সোশাল ডিসট্যান্স না মেনে ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি করল। গাদাগাদি ভিড় হয়ে গেল। তারপর নিয়ে গেল লালবাজার।"
এদিন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সিপিএমের শীর্ষ নেতত্ব হাজির ছিলেন। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিমদের দাবি, "এই রাজ্যে করোনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে, তথ্য গোপন না করে সঠিক তথ্য তুলে ধরা যার ফলে মানুষ আরও সচেতন হবে। রেশন দিতে হবে, মজুরি দিতে হবে, কালোবাজারী বন্ধ করতে হবে, জনধন অ্যাকাউন্টে সাড়ে সাত হাজার টাকা দিতে হবে।"
লকডাউনের জনমানবহীন কলকাতার রাস্তায় বামেদের এই কর্মসূচি নজির হয়ে থাকল বলে মনে করা হচ্ছে। সেই কর্মসূচিও গড়াল লালবাজার পর্যন্ত। সিপিএম নেতাদের দাবি, লালবাজার সেন্ট্রাল লক-আপে ঢুকতে বলেছিল পুলিশ। সেলিম বলেন, "আমরা জানতে চেয়েছিলাম সেন্ট্রাল লক-আপ জীবানুমুক্ত করা হয়েছে কিনা? যে গাড়িতে আমাদের আনা হল তা-ও কি জাবীনু মুক্ত? যে পুলিশ কর্মীরা আমাদের ধরলেন তাঁদের কোনও টেস্ট হয়েছে কি? আমাদেরও থার্মাল টেস্ট করা হয়নি। তারপরই নিঃশর্তে লালবাজার থেকে আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন