করোনাভাইরাসের জের। পুরভোট পিছনো নিয়ে এক সুর যুযুধান তৃণমূল ও বিজেপির। রাজ্যব্যাপী আসন্ন পুরভোট নিয়ে আজ রাজ্য নির্বাচন কমিশন সর্বদল বৈঠক ডেকেছে। সেই বৈঠকেই বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুরভোট আপাতত স্থগিত করার পক্ষে মতামত দেবে রাজ্যের শাসক দল। একই কথা জানাতে পারে গেরুয়া শিবিরও। জোট সঙ্গী কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে স্পষ্ট করেছে বামেরা।
করোনার গুঁতো পুরভোটেও। সর্বদল বৈঠকের পর আসন্ন পুরভোট যে পিছচ্ছে তা একপ্রকার অবধারিত। তৃণমূল বিবৃতি দিয়ে জানিছে যে, 'কোভিড-১৯ সঙ্কট বিবেচনা করে আপাতত পুরভোট স্থগিত রাখার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হবে। সব রাজনৈতিক দলকেই হাতে হাত মিলিয়ে করোনা মোকাবিলার আর্জি জানানো হচ্ছে।'
ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোট হবে কিনা তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। দলের মধ্যে এ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শুনেছি অন্য দলগুলোও আপাতত ভোট স্থগিতের পক্ষে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এটা একটা অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। দেখা যাক সর্বদল বৈঠকে কী হয়।'
পুরভোটের দিনক্ষণ নিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে কমিশনের ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অবস্থা ভয়াভয় হলে ভোট আপাতত স্থগিত রাখা হোক।' একই সঙ্গে ভোট শান্তিপূর্ণ করারও দাবি জানিয়েছেন মেদিনীপুরের সাংসদ।
আরও পড়ুন: করোনার জেরে বাংলায় পুরভোট অনিশ্চিত
করোনা আতঙ্কে আসন্ন পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে বাম-কংগ্রেসও। তবে পুরো বিষয়টি দুই শিবিরের সঙ্গে আলোচনার পরই স্পষ্ট করে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বাম নেতৃত্ব। এবার পুরভোটে জোট গড়ে লড়াই করবে বাম-কংগ্রেস।
কলকাতা, হাওড়া সহ রাজ্যের ১১০ পুরসভার ভোট আগামী এপ্রিলেই করার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। প্রচারে অপর্যাপ্ত সময়ের কথা বলে যার বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও বিরোধীদের মতামত নিয়ে পুরভোট করার কথা বলেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে আজ কমিশনের ডাকে পুরভোট নিয়ে রয়েছে সর্বদল বৈঠক। নিয়ম অনুশারে, বিজ্ঞপ্তি জারি থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ২৫ দিনের ব্যবধান থাকে।
মারণ ভাইরাস সংক্রমণের জেরে ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঙোষণা করা হয়েছে। জমায়াতের সম্ভাবনা রয়েছে এমন জায়গা বন্ধ করা, স্পোটিং ইভেন্ট ও কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে পুরভোট কবে হবে? কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়, 'করোনাভাইরাসের প্রকোপ যেভাবে বাড়ছে তাতে ভোট কবে হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। একবার ভোটের দিন ঘোষণা হলেই প্রচার, জমায়েত হবে। যা বর্তমানে একেবারেই উচিত নয়।' করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে জমায়েত, ভিড় এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।
কমিশন সূত্রে খবর, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে মে মাসের শেষ সপ্তাহ বা জুন মাসে পুরভোট হতে পারে। রমজান মাসে ভোটে রাজি নয় মমতা সরকার। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে রমজান মাস শেষ হচ্ছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন