কোভিড দুর্নীতি- হিমাচলে পদত্যাগ রাজ্য সভাপতির

 ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে বিন্দালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সব কথা চিঠিতে লেখা রয়েছে” এবং “এর অন্য কোনও অর্থ বের করা ঠিক হবে না।”

 ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে বিন্দালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সব কথা চিঠিতে লেখা রয়েছে” এবং “এর অন্য কোনও অর্থ বের করা ঠিক হবে না।”

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Covid 19 scam bjp

হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজীব বিন্দাল

হিমাচলপ্রদেশে বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে দলের রাজ্য সভাপতি ডক্টর রাজীব বিন্দাল বুধবার পদত্যাগ করেছেন। সরকারের কোভিড সময়ে মেডিক্যাল সাপ্লাই নিয়ে দুর্নীতির তদন্তের জেরে মাথা উঁচু করে রাখতেই তাঁর এই পদক্ষেপ।

Advertisment

৬৫ বছরের বিন্দাল জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যসভার অধ্যক্ষ পদে ছিলেন। এর পর তাঁকে দলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে বেছে নেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। বিন্দালের পদত্যাগের এক সপ্তাহ আগেই ভিজিল্যান্স ও দুর্নীতি দমন শাখা রাজ্যের হেলথ সার্ভিসের ডিরেক্টর ডক্টর এ কে গুপ্তাকে গ্রেফতার করে। একটি অডিও ক্লিপে দুই ব্যক্তির ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথোপকথনের ভিত্তিতে এই গ্রেফতারি।

৪৩ সেকেন্ডের এই ক্লিপের জেরে বিরোধী কংগ্রেস দল সরকারকে আক্রমণ করে। রাজ্য কংগ্রেসের দায়িত্বে থাকা রজনী পাটিল অভিযোগ করেন, ওই ক্লিপে কোনও একজন ব্যক্তি “শাসক দলের এক নেতাকে ঘুষ দেওয়ার কথা বলছেন”।

প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শান্তা কুমার অভিযোগ করেছেন এই কেলেংকারি “মাথা হেঁট করে দিয়েছে”। বিন্দাল যদিও এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও রকম যোগাযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করেছেন যাতে কোনও ভাবে তদন্ত প্রভাবিত না হয়। বিজেপি এক বিবৃতিতে বলেছে নাড্ডা এই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।

Advertisment

বিন্দাল তাঁর পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, “সম্প্রতি হেলথ সার্ভিস ডিরেক্টরের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, যার জেরে সরকার দ্রুত অ্যাকশন নিয়েছে এবং ডিরেক্টরের বিরুদ্ধ অভিযোগ এনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু লোক পরোক্ষভাবে বিজেপির দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছে।”

অতিমারীর সময়ে তাঁর দল যেভাবে ত্রাণের কাজ হাতে নিয়েছে, তার উল্লেখ করে বিন্দাল বলেছেন, “যেহেতু আমি বিজেপি সভাপতি এবং আমরা চাই এই দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ তদন্ত হোক, সে কারণে আমরা একে সবরকম চাপ বা প্রভাবমুক্ত রাখতে চাই। আমি নৈতিকভাবে মাথা উঁচু করে পদত্যাগ করছি।”

এ ব্যাপারে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে বিন্দালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সব কথা চিঠিতে লেখা রয়েছে” এবং “এর অন্য কোনও অর্থ বের করা ঠিক হবে না।”

পাঁচবারের বিধায়ক বিন্দাল নিজে আয়ুর্বেদ মেডিসিন ও সার্জারির স্নাতক। তিনি সোলান থেকে তিনবার নির্বাচিত হয়েচেন এবং বর্তমানে নাহান কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হয়ে বিধায়ক পদে রয়েছেন।

ডক্টর গুপ্তাকে ২০ মে রাতে গ্রেফতার করা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। যে অডিও ক্লিপের কথা হচ্ছে, সেখানে ৫ লক্ষ টাকা ডেলিভারির কথা বলা হলেও কোনও ব্যক্তির পরিচয় জানানো হয়নি। এই ক্লিপে যা শোনা গিয়েছে, তা বালা করলে এরকম দাঁড়ায়-

প্রথম ব্যক্তি- আমি আপনার মাল নিয়ে আসছি।

দ্বিতীয় ব্যক্তি- ঠিক আছে, নিয়ে এস, কত আনছ?

প্রথম ব্যক্তি- স্যার, আপনি ৫ লাখ বলেছিলেন, জনাব।

দ্বিতীয় ব্যক্তি- ঠিক আছে, নিয়ে এস।

এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিশেষ তদন্ত দলের সদস্য এসপি শালিনী অগ্নিহোত্রী বলেছিলেন ব্যুরোর তরফ থেকে অডিও ক্লিপের সত্যতা “সূত্রের মাধ্যমে” যাচিয়ে দেখা হয়েছে।

তিনি বলেন, “তদন্তে মনে হচ্ছে ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন মেডিক্যাল সাপ্লাই ও সরঞ্জাম কেনা কাটা নিয়ে দুর্নীতি চলছে। এই ক্রয়ের সঙ্গে বেশ কিছু সাপ্লায়ার যুক্ত, এমনকী রাজ্যের বাইরের সাপ্লায়াররাও।”

এডিজি অনুরাগ গর্গ বলেছেন গুপ্তাকে জেরার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জেরায় “বিভিন্ন ভুল ও বিপথচালনাকারী উত্তর দিচ্ছিলেন এবং গত কয়েকদিনের ঘটনা সম্পর্কে বলতে বলা হলে তিনি আংশিক বিস্মরণের ভান করছিলেন।”

তিনি জানান, “গুপ্তা ও অন্য ব্যক্তির গলার স্বরের নমুনা ও মোবাইল ফোন ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।”

গ্রেফতারের পরেই গুপ্তাকে “ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের জন্য” হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ও মঙ্গলবার থেকে তিনি পুলিস হেফাজতে রয়েছেন।

bjp COVID-19