দিন যত এগোচ্ছে ততই যেন সংশয়ের জাঁতাকলে জড়িয়ে পড়ছে সিপিএম। দলের অভ্যন্তরে শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়াই থেকে নির্বাচনী জোট-আসন রফা, পার্টি লাইন নির্ধারণ। এবার বিভ্রান্তি আলিমুদ্দিনের পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম তথা দলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তাকে শাস্তি নিয়ে। শাসক দলের মুখপত্রে অধ্যাপিকা ডঃ অজন্তা বিশ্বাসের প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর প্রসংশা করেছিলেন অজন্তা। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করে দলের এরিয়া কমিটি। ছয় মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সেই সুপারিশ পাঠানো হয় সিপিএমের কলকাতা সম্পদক মণ্ডলীতে। যেখানে শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে তিন মাস করা হয়। কিন্তু জেলা কমিটির বৈঠকে পার্টি লাইন বিরোধী কাজের দায়ে আজন্তা বিশ্বাসের শাস্তির মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়ে মোট ছয় মাসে সিলমোহর পড়ে।
প্রয়াত রাজ্য সম্পাদকের মেয়ের দল বিরোধী লেখা নিয়ে শুরু থেকেই হইচই কম হয়নি। দলের মধ্যেও এ নিয়ে নানা মতের ইঙ্গিত মিলেছে। কিন্তু, অজন্তার লেখায় দলের বেহাল অবস্থা আরও বেআব্রু হয়েছে। কার্যত অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে প্রতিপক্ষকে। তাই দলের নীতি মেনে শাস্তি তাঁকে পেতেই হবে বলে সিদ্ধান্ত নেন আলিমুদ্দিনের নীতিনির্ধারকরা।
আরও পড়ুন- গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, ১০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ
কিন্তু প্রশ্ন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত কেন জেলা কমিটি বদলে দিল? অজন্তা বিশ্বাসের প্রকাশ্যে অনুশোচনা না করার মানসিকতাই কী এ জন্য দায়ী? নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে সিপিএমের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী রাজনীতির সমীকরণ? গুঞ্জন যে জেলা কমিটির প্রতাপের কাছে ম্লান কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর জারিজুরি।
তিন দশক প্রতাপের সঙ্গে বাংলার শাসন ক্ষমতা যাদের হাতে ছিল সেই বামেরা গত দশ বছর ধরেই ক্ষয়িষ্ণু। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বিধায়নসভায় একটিও আসন পায়নি তারা। কমতে কমতে দলের ভোটের হারও তলানীতে। স্পষ্ট যে মানুষ বামেদের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। আজকাল আর আদর্শ-নীতির বা কাজের জন্য নয়, নানা বিতর্কের জন্যই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন লালা পতাকাধারীরা। যা নিয়েই অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যস্ত থাকেন দলের নেতৃত্ব। প্রচারে ফেরে সিপিএম। এবারও যেন সেই লক্ষ্যেই আলিমুদ্দিন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন