From zero to a new Left in West Bengal: পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার ফলতাজুড়ে সকালের প্রচার শেষ করে, ৩৪ বছর বয়সি প্রতীকুর রহমান খোলা জিপ থেকে নামলেন। সেখানে ছিলেন সিপিএমে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়। প্রতীকুর যখন একটু জিরিয়ে নিতে সিপিএমের আমতলা লোকসভা নির্বাচন অফিসে ঢুকছেন, তখন পার্টি অফিসের কাছে জড় হয়ে গিয়েছে ছোট এক জনতা। তার মধ্যে থেকে একজন হাত নেড়ে তাঁকে গ্লুকোজ পাউডারের প্যাকেট দিলেন। অন্য একজনও পার্টি ফান্ডে কয়েকটা টাকা দিলেন। একজন আবার, প্রার্থীর কাছে গিয়ে বললেন, 'শুভেচ্ছা রইল, চালিয়ে যাও।' এটা কেবল একটা কেন্দ্রেই নয়।
দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্রেই এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সিপিএমের মধ্যে এভাবেই পুনরুজ্জীবন হচ্ছে। যার সামনে রয়েছেন বঙ্গ সিপিএমের বেশ কয়েকজন যুব নেতা- প্রতীকুর রহমান, সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধররা। যাঁরা আগে দলের ছাত্র শাখা এসএফআই-তে ছিলেন। এঁদেরকে ২০২১-এ সিপিএম বিধানসভা নির্বাচনেও প্রার্থী করেছিল। দলের আমতলা পার্টি অফিসের একতলায় একটা ছোট ঘরে বসে প্রতীকুর বললেন, 'যদি কলেজ ক্যাম্পাসগুলো ভালো ডাক্তার, আইনজীবী, শিক্ষক তৈরি করতে পারে, তবে কেন ভালো রাজনীতিবিদ তৈরি করতে পারে না? আমাদের লক্ষ্য হল সিস্টেম পরিবর্তন করা।'
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং বামেরা একসঙ্গে লড়ে একটাও আসনে জিততে পারেনি। সেখানে দাঁড়িয়ে এবারের লড়াই কতটা কঠিন? জবাবে প্রতীকুর বলেন, 'শূন্য একটা আপেক্ষিক শব্দ। বামপন্থীরা বিশ্বাস করে এটা শুরু। হতাশার কোনও জায়গা নেই। আমরা এই সত্যের দ্বারা অনুপ্রাণিত যে একটা কাঠামো গড়ে তোলার জন্য এটা একটি নতুন সূচনা।' রাস্তায়, প্রতীকুরকে বহু জায়গায় দেখা গিয়েছে, থামতে হয়েছে। কারণ, জনগণ অভ্যর্থনা দিয়েছেন। সিপিএম কর্মীদের ছোট ছোট দল তাঁকে বিভিন্ন মোড়ে মালা পরিয়েছেন।
ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড, বর্তমান সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন প্রতীকুর। লড়াইটা নিঃসন্দেহে কঠিন। তার মধ্যেই যেন চেষ্টা চালাচ্ছেন তরুণ বাম নেতা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যর্থতার পর সিপিএম তার তরুণ মুখেদের সংগঠনের নিম্নস্তর থেকে নির্বাচনী ময়দানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় মীনাক্ষি মুখার্জি, সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধর, প্রতীকুর রহমান, ঐশী ঘোষ, সায়ন ব্যানার্জি, কলতান দাশগুপ্ত ও সোনামণি টুডুর নাম সামনে এসেছিল।
আরও পড়ুন- ঘূর্ণিঝড় রেমাল, কেন এই ঘূর্ণিঝড়ের এমন নাম? কেনই বা ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়?
বিধানসভা নির্বাচনে এই তরুণদের দলটা ব্যর্থ হয়েছে। মাত্র ৭% ভোট পেয়েছে। তবে, তারপরও আশা হারায়নি বামেরা।
সেলিম বললেন, 'বাংলায় পুনরুত্থানের জন্য আমাদের একটি পুনরুজ্জীবিত বাম দরকার। এটা সিপিএমের পুনর্গঠন ছাড়া সম্ভব না। যা কেবলমাত্র তরুণদের নিয়েই সম্ভব। আমাদের তরুণদেরকে সামনে আনতেই হবে।'