১৯-এ জানুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশে ২৩ জন বিরোধী নেতাকে এক মঞ্চে এনে হাজির করেছিলেন মমতা। তারপর একে একে প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপি-র হেভি ওয়েট নেতারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সভা করে গেলেন লোকসভাকে মাথায় রেখে। দু'দিক থেকেই চাপ নিয়ে রবিবার মাঠে নামছে সিপিএম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য একে সিপিএম-এর ব্রিগেড সমাবেশের চেয়ে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হিসেবেই দেখছেন।
পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে শেষ মুহূর্তে ব্রিগেড সমাবেশে আসা বাতিল করেছেন জেএনইউ -এর প্রাক্তন বাম ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমার। ঘাড়ে স্প্যাসমজনিত সমস্যা নিয়ে শনিবার বিকেলে বেগুসারাই-এর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল কানহাইয়া কুমারকে। ৩ ফেব্রুয়ারির জন সমাবেশে আসার ব্যাপারে খুবই উৎসাহী ছিলেন কানহাইয়া। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও চিকিৎসকেরা সম্পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন ৩২ বছরের বাম নেতাকে। আপাতত বাড়িতেই ফিজিওথেরাপি হচ্ছে তাঁর।
রাজনীতির ময়দানে বামেদের জৌলুস মলিন হয়ে আসার দিনগুলোতে মানুষের মনে কিঞ্চিৎ হলেও আশা জাগিয়েছিলেন যিনি, তিনি কানহাইয়া কুমার। তাঁর ভাষণ শুনে মুগ্ধ হয়েছেন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী নেতারাও। তাই কানহাইয়ার আসতে না পারা সিপিএম -এর কাছে নিঃসন্দেহে একটা ধাক্কা তো বটেই।
ব্রিগেড সমাবেশের জন্য শুক্রবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। পাথরপ্রতিমা, উত্তর দিনাজপুর থেকে বহু সিপিএম সমর্থক শনিবারেই পৌঁছে গিয়েছেন মিছিলনগরীতে। জেলা থেকে আসা সমর্থকেরা আম জনতার সঙ্গেই ট্রেনে বাসে চেপে, যে যেমন পেরেছেন, শনিবার সকালেই চলে এসেছেন ব্রিগেডে। খবর পাওয়া মাত্র আলিমুদ্দিন থেকে কর্মীরা খিচুড়ি রান্না করে নিয়ে আসেন বাম সমর্থকেদের জন্য। সমর্থকদের সবার হাতে যে লাল ঝণ্ডা আছে, এমনও নয়, কিন্তু আবেগের লাল রঙ ওদের অস্তিত্বে।
আসন্ন লোকসভার আগে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আবার সমঝোতা না হলে সবেধন নীলমণি ২টি আসনেও সিপিএম নিজেদের ক্ষমতা কায়েম রাখতে পারবে কি না, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে হ্যাঁ, ৩ ফেব্রুয়ারির সমাবেশে রাজ্যের সাধারণ মানুষকেই হাতিয়ার করতে চাইছে সিপিএম।
ইতিমধ্যে সোশাল মিডিয়ায় বেশ চর্চিত হচ্ছে সিপিএম-এর ব্রিগেড সমাবেশ। দলের সদস্য থেকে শুরু করে সমর্থক দিনকতক ধরেই জানান দিয়ে যাচ্ছেন ব্রিগেডে থাকছেন তাঁরা। কেউ সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির ছবি, ভিডিও।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্রিগেডের মঞ্চে থাকতে পারবেন কি না, সে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য বিগত কয়েক বছর বাড়ি থেকে বেরোতেই পারেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। মাস খানেক আগে মুখে অক্সিজেন মাস্ক নিয়েই শুনতে হয়েছিল সতীর্থ নিরুপম সেনের মৃত্যু সংবাদ। তবে 'জনতার ব্রিগেড'-এ অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়েও মঞ্চে আসতে পারেন বুদ্ধদেব।