KMC Poll 2021: পুরভোটের দুপুরে অপ্রত্যাশিত ‘বিরোধী ঐক্য’ দেখল উত্তর কলকাতা। বড়তলা থানার সামনে ভোট লুঠ এবং ছাপ্পার অভিযোগে ধর্নায় সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপির। এই প্রতিবাদ থেকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। পতাকা হাতে একসঙ্গে স্লোগানিং করতে দেখা গিয়েছে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে।
সুত্রের খবর, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মোহনকুমার গুপ্তা সকাল থেকেই অবাধ রিগিংয়ে মদত দিচ্ছেন। নীরব দর্শকের ভূমিকায় পুলিশ। এই অভিযোগে বেলা বাড়লে বড়তলা থানার সামনে পতাকা হাতে জমায়েত হয় বাম এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা। সেই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ছিলেন দুই দলের কর্মী-সমর্থকরা। যেহেতু এই পুরভোটে বাম এবং কংগ্রেসের জোট হয়নি, তাই দুই দলই পৃথক ভাবে প্রার্থী দিয়েছে। সেই বিক্ষোভ অবস্থানের কিছুক্ষণের মধ্যেই দলবল নিয়ে এসে উপস্থিত হন বিজেপি প্রার্থীরা। গলা চড়িয়ে তিন প্রার্থীকেই দেখা গিয়েছে ছাপ্পা এবং ভোট লুঠের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলতে।
যদিও এই অপ্রত্যাশিত বিরোধী জোটকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। কিন্তু ভোট সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে রাজ্যের তিন বিরোধী দল একফ্রেমে থাকলে, আগামি দিনে রক্তচাপ বাড়তে পারে শাসক দলের। এমনটাই রাজনৈতিক মহলের দাবি। এর আগে অবশ্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক সভায় রাজ্যের তিন বিরোধী দলকে একসূত্রে বেঁধে কটাক্ষ করেছেন। সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে জগাই, মাধাই এবং গদাই খোঁচা দিয়েছেন তিনি। এবার সেই জগাই, মাধাই, গদাই এদিন একজোট হয়ে প্রতিবাদে সরব।
এদিকে, কলকাতা পুরভোটে অশান্তিতে তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অশান্তির ফুটেজ থাকলে তা প্রকাশ্যে আনারও দাবি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। একইসঙ্গে বিরোধীদের বিঁধে তৃণমূলের যুবরাজের টিপ্পনি, ”বুথে এজেন্ট দিতে না পরলে তার দায় তৃণমূলের নয়।”
কলকাতা পুরভোটেও এড়ানো গেল না হিংসা। আবারও নির্বাচনের দিন ঝরল রক্ত। রবিবার সকাল থেকে কলকাতার ১৪৪টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে অশান্তির খবর মিলতে শুরু করে। কোথাও ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ, কোথাও আবার প্রার্থীর এজেন্টকে ফেলে কিল, চড়, ঘুসি। কোথাও বুথ দখলের অভিযোগ তো কোথাও আবার বোমাবাজি।
দফায়-দফায় অশান্তি কলকাতা পুরভোটে। বেলা যত গড়িয়েছে ততই অশান্তি বেড়েছে। একাধিক ক্ষেত্রে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধেই গোলমাল পাকানোর অভিযোগ উঠেছে। যদিও দলের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে শাসকদল।
এদিন বেলা বাড়তেই ভোট দিতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে কলকাতা পুরভোট নিয়ে আগেভাগে তিনি সতর্ক করে দিয়েছিলেন দলের নেতা-কর্মীদের একাংশকে। ভোট দিতে বাধা, হুমকির প্রমাণ মিললেই দলের কর্মীদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। তবে কার্যক্ষেত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই হুঁশিয়ারিতে কী আদৌ কোনও কাজ হল?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন