তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি একাধিকবার বলেছেন, "সিপিএম অক্সিজেন যোগাচ্ছে বিজেপিকে"। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির সাফল্য অনেকটাই এসেছে সিপিএমের সান্নিধ্যে, এও বলেছেন তিনি। তবে এদিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের স্বরে শোনা গেল সেই গেরুয়া আতঙ্ক।
এর আগে আমডাঙ্গার আন্দোলন সিপিএমকে রাজ্যে পথ দেখাবে একথাই এদিন ধর্মতলার সভায় বললেন একাধিক বক্তা। সেখানেই সূর্যকান্তবাবু তাঁর বক্তব্যে আমডাঙ্গার সিপিএম কর্মীরা "তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিজেপিকে যাতে বেছে না নেন," সেই বিষয়ে সতর্ক করেন।
বক্তব্য রাখছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি: শশী ঘোষ
আমডাঙ্গায় সিপিএম লড়াই করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। সিপিএমের দাবি, এখনও দলের বহু নেতা-কর্মী ঘরছাড়া। ফিরতে পারছেন না বাড়িতে। সেখানে গঠন হয়নি পঞ্চায়েত। কৃষি জমিতে গজিয়ে গিয়েছে ঘাস। বন্ধ রয়েছে স্থানীয় স্কুল। পঠন-পাঠন শিকেয় উঠেছে ছাত্রছাত্রীদের। আমডাঙ্গার বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ফিরিয়ে আনার দাবিতে এদিন কলকাতায় মিছিল করল সিপিএম। তবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সাধারন সম্পাদকের কণ্ঠে স্পষ্ট ছিল বিজেপি নিয়ে ভয়।
আমডাঙ্গায় স্কুলে ফেরার দাবিতে খুদে গ্রামবাসীরা। ছবি: শশী ঘোষ
আমডাঙ্গায় তথাকথিত তৃণমূল কর্মীদের হাতে নিহত মুজফফরের বাবা আলিবর্দি খাঁ ওয়াই চ্যানেলের মঞ্চে। ছবি: শশী ঘোষ
তিনি বলেন, "বিজেপিকে বুঝেছেন বলতে পারব না। আপনারা এখানে তাদের সরকার দেখেন নি। অন্য রাজ্যের মানুষ বিজেপি সরকার দেখেছেন। যখন মোহ থাকে, তখন ম্যাজিকের মত সত্যি মিথ্যে বুঝতে পারা যায় না। মনে হয়, এটা নতুন জিনিস, একটু টেস্ট করে দেখে নেওয়া যাক। চেখে দেখা যাক। অনেক কিছু চেখে দেখবেন। এটা চেখে দেখবেন না। এটা বিষ।" এভাবেই সূর্যকান্তবাবু সতর্ক করেন আমডাঙ্গার সিপিএম নেতা-কর্মীদের।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন, "প্রতিবাদের মুখ আমডাঙ্গা। বামেরা জয়ী হলেও পঞ্চায়েত গঠন হয়নি। আপনারা একা নন, আমরাও আছি। তৃণমূল নিজেদের মধ্যে খুনোখুনি করে মরছে। পুলিশকে থানায় থাকতে বলুন। আমরা থাকবো, আপনারা থাকবেন, তারপর বুঝে নেব," হুঙ্কার ছাড়েন তিনি।
এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। মঞ্চে অন্যদের মধ্যে ছিলেন চন্দন সেন, ভারতী মুৎসুদ্দি, মন্দাক্রান্তা সেন। হাতা, খুন্তি, কাটারী নিয়ে বিপ্লবের কথা বলেছেন চন্দন। তাঁর বক্তব্য, "যে ভাষা যে বোঝে সেই ভাষায় বোঝানো দরকার।"