Advertisment

ISF-এর সঙ্গে জোট 'ভুল' সিদ্ধান্ত, রাজ্য কমিটির বৈঠকে মানল সিপিএম

সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, হেরে গিয়েছেন বলেই আগ বাড়িয়ে কোনও জোট ভেঙে দেওয়ার ‘অসৌজন্য’ তাঁরা দেখাবেন না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Left Front, West Bengal Assembly Election Result 2021

বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির কারণ খুঁজতে বসে সেই 'ভুল'-এর তত্ত্ব সামনে আনল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। শনিবার সন্ধ্যা থেকে চলা সিপিএম রাজ্য কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক তপ্ত থাকল জোট শরিক বাছাই নিয়ে। আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দলের সঙ্গে জোট গড়ার কারণ, তাড়াহুড়ো এবং পদ্ধতিগত ত্রুটি নিয়ে বৈঠকে সরব হলেন একাধিক নেতা।

Advertisment

দলে নানা প্রশ্নের মুখে পড়লেও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, হেরে গিয়েছেন বলেই আগ বাড়িয়ে কোনও জোট ভেঙে দেওয়ার ‘অসৌজন্য’ তাঁরা দেখাবেন না। জোট-শরিকদের কেউ যদি বামেদের সঙ্গত্যাগ করতে চায়, তা হলে আলাদা কথা। বকলমে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট সিদ্ধান্ত যে ভুল, সেটা একপ্রকার মেনে নিয়েছেন দলের রাজ্য নেতারা।

তবে ভোটের ফলপ্রকাশের পর ঘুরিয়ে যাঁরা দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তোপ দেখেছেন, সেই সব নেতাদের সতর্ক করেছে রাজ্য কমিটি। প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যকে তিন মাস সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রের খবর, প্রবীণ নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের জেরে তাঁর সঙ্গে সূর্যবাবুর দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছে শনিবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে। সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, নবগঠিত আইএসএফের মতো দলের সঙ্গে তড়িঘড়ি জোট, মানুষের কাছে বোঝানোই যায়নি। বরং, প্রতিক্রিয়া হয়েছে উল্টো।

অন্য একাংশের আরও মত, আইএসএফের হাত ধরার আগে রাজ্য কমিটিতে আলোচনা হয়নি। ফলে, ভোটের আগে জেলার নেতারা জানতেই পারেননি, এই বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য কী হবে! তাঁদের শুধু আসন ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। ভোটের আগে ওই সময়ে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে আলোচনা করেই আইএসএফ-কে আসন ছাড়তে উদ্যোগী হয়েছিল আলিমুদ্দিন। জবাবি ভাষণে সূর্যবাবু অবশ্য বলেছেন, 'রাজ্য কমিটিই ওই পরিস্থিতিতে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার অর্পণ করেছিল।'

বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী প্রথম রাজ্য কমিটির অনলাইন বৈঠক চলেছে রাত পর্যন্ত। দলীয় সূত্রে যা খবর, জেলা থেকে বেশ কিছু আত্মসমালোচনার সুর উঠে এসেছে বৈঠকে। যেমন, রাজ্য কমিটির সদস্যদের কেউ কেউ বলেছেন, তৃণমূল সরকারের যে সব পদক্ষেপকে ‘অনুদানমূলক’ বলে আক্রমণের পথে গিয়েছিল বামেরা, দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষ ফায়দার আশায় সেই সব প্রকল্পের পক্ষেই মত দিয়েছেন।
একটা অংশ অত্যাধিক তৃণমূল বিরোধিতা, বিশেষ করে মমতা বিরোধিতা জনমানসে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এমন মন্তব্য করেছে রাজ্য কমিটির বৈঠকে।

বিধানসভায় এ বার বাম ও কংগ্রেস যখন শূন্য হয়ে গিয়েছে, সংযুক্ত মোর্চার শরিক হয়ে একমাত্র আসনটি আইএসএফ-ই জিতেছে। তারা জোট ধরে রাখারই পক্ষপাতী।

দলের ভিতরে-বাইরে সমালোচনা থাকলেও সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বও আগ বাড়িয়ে জোটে ইতি টানতে নারাজ। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমরা ৩% না ৫% ভোট পেয়েছি, সেটা মাথায় রাখলে চলবে না। সোজা কথায়, মানুষের সমর্থন পাইনি! আবার মানুষের কাছে গিয়েই বুঝতে হবে, আমাদের কাছে তাঁরা কী চান।’’ রাজ্য কমিটির পরবর্তী বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী ১৯-২০ জুন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Mamata Banerjee Cpm West Bengal Poll 2021 ISF
Advertisment